Tuesday, May 16, 2017

শবে বরাত- কিছু ভ্রান্তি নিরসন..


........................................
(শবে বরাত কোথায় আর আমরা কোথায়!)
.......................................................
ইসলাম শুধু মুসলমানদেরকে আমলই শিখায় না, বরং আমলের সাথে সাথে তদীয় আমলের সঠিক আকীদা-বিশ্বাসেরও শিক্ষা দেয়। বিধায় যে কোন আমল করার পূর্বে সে আমল সম্পর্কিত সঠিক আক্বীদা-বিশ্বাস আমাদের অবশ্যই রাখা চাই। এ মর্মে বলতেই হয় যে, বছর পেরিয়ে আমাদের মাঝে যখন শাবান মাস আসে, তখন শবে বরাত নিয়ে আমাদের ব্যস্ততার কোন সীমা থাকে না। কারণ আগামী এক বছরের বাজেট যে শবে বরাতেই স্থির হয় এমন আক্বীদা-বিশ্বাস আমাদের মাঝে জমে বসেছে।
প্রকৃত পক্ষে এ রাতে আসালেই বাজেট পেশ করা হয় কি না? বা এরাতকে শবে বরাত বলা যাবে কি না? এবং এরাত সম্পর্কে কুরআন-সুন্নার সঠিক দিক নির্দেশনা কি? তা থেকে আমরা অনেক দুরে! তাই শবে বরাত সম্পর্কে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা স্মরণ রাখা দরকার, যাতে করে সে রাতের আমলের সাথে সাথে আমাদের আক্বীদা-বিশ্বাসটাও ঠিক হয়ে যায়।
হা;ঁ শাবান মাসে একটি রাত রয়েছে, যে রাতটি বরকতময় ও ফজিলতপূর্ণ। হাদীস শরীফে এ রাতের নাম করণ করা হয়েছে
(لیلۃ النصف من شعبان)
যার বাংলা অর্থ “ শাবান মাসের মধ্যরাত” তবে রাতটি বরকতময় ও ফজিলতপূর্ণ হওয়ার কারণে কেউ কেউ এ রাতকে (لیلۃ مبارکۃ)
(লাইলাতুম মুবারকাহ) বলেও আখ্যায়িত করেছেন। আবার এ রাতে যেহেতু সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয় এ জন্য রাতকে
লাইলাতুল বারাআত
(لیلۃ البراءۃ )
সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার রাতও বলা হয়।
এ সম্পর্কীয় সহীহ বর্ণনাসমূহের মধ্যে থেকে একটি বর্ণনা:
" يطلع الله تبارك و تعالى إلى خلقه ليلة النصف من شعبان ، فيغفر لجميع خلقه
إلا لمشرك أو مشاحن "
قال الألباني في " السلسلة الصحيحة " ৩ / ১৩৫ :حديث صحيح ، روي عن جماعة من الصحابة من طرق مختلفة يشد بعضها بعضا و هم معاذ ابن جبل و أبو ثعلبة الخشني و عبد الله بن عمرو و أبي موسى الأشعري و أبي هريرةو أبي بكر الصديق و عوف ابن مالك و عائشة . أما حديث معاذ فيرويه مكحول عن مالك بن يخامر عنه مرفوعا به . أخرجه ابن أبي عاصم في " السنة " رقم ( ৫১২ - بتحقيقي ) حدثنا هشام بن خالد حدثنا أبو خليد عتبة بن حماد عن الأوزاعي و ابن ثوبان ( عن أبيه ) عن مكحول به . و من هذا
الوجه أخرجه ابن حبان ( ১৯৮০ ) و أبو الحسن القزويني في " الأمالي " ( ৪ / ২ ) و أبو محمد الجوهري في " المجلس السابع " ( ৩ / ২ ) و محمد بن سليمان الربعي في جزء من حديثه " ( ২১৭ / ১ و ২১৮ / ১ ) و أبو القاسم الحسيني في " الأمالي ")ق ১২ / ১ ) و البيهقي في " شعب الإيمان " ( ২ / ২৮৮ / ২ ) و ابن عساكر في " التاريخ " ( ১৫ / ৩০২ / ২ ) و الحافظ عبد الغني المقدسي في " الثالث و التسعين
من تخريجه " ( ق ৪৪ / ২ ) و ابن المحب في " صفات رب العالمين " ( ৭ / ২ و ১২৯ / ২ و قال : " قال الذهبي : مكحول لم يلق مالك بن يخامر " .قلت : و لولا ذلك لكان الإسناد حسنا ، فإن رجاله موثوقون ، و قال الهيثمي في مجمع الزوائد " ( ৮ / ৬৫ ) : " رواه الطبراني في " الكبير " و " الأوسط "
و رجالهما ثقات " .
অর্থ: সাবান মাসের মধ্য রাতে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর মাখলুকের প্রতি রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও হিংসুক ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন।
অন্য এক বর্ণনায় এসেছে:
فعن عائشة رضي الله عنها عن النبي صلى الله عليه وسلم قال:
إن الله تعالى ينزل ليلة النصف من شعبان إلى السماء الدنيا، فيغفر لأكثر من عدد شعر غنم كلب (الترمذي، وابن ماجة، وأحمد
– إن الله – تعالى – ينزل ليلة النصف من شعبان إلى السماء الدنيا ، فيغفر لأكثر من عدد شعر غنم كلب الراوي: عائشة: الألباني – المصدر: تخريج مشكاة المصابيح – الصفحة أو الرقم: ১২৫১ خلاصة حكم: صحيح لغيره
অর্থ: হযরত আয়েশা রা. বলেন, রসূল সা. বলেছেন: সাবান মাসের মধ্য রাতে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর মাখলুকের প্রতি রহমতের দৃষ্টি দেন এবং কাল্ব
( কাল্ব; আরবের প্রশিদ্ধ একটি গোত্র, যাদের ছাগল-ভেড়ার পরিমাণ ছিলো অনেক) গোত্রের ছাগল-ভেড়ার পশমের চেয়েও বেশী সংক্ষক মানুষকে ক্ষমা করেন।
সার কথা, সাবান মাসের মধ্য রাত ফজিলতপূর্ণ একটির রাত, এ রাতের আমারা তিনটি নাম পেলাম
ক. (لیلۃ النصف من شعبان) “ শাবান মাসের মধ্যরাত”
খ. রাতটি বরকতময় হওয়ার কারণে বলা হয়, (لیلۃ مبارکۃ)
এটি এরাতের গুণবাচক নাম।
গ. এ রাতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয় তাই এ রাতকে (لیلۃ البراءۃ )
ও বলা হয়,
এটিও এ রাতের গুণবাচক নাম।
তিনটি নামের মধ্যে থেকে এ রাতকে আমরা প্রথম নামেই আখ্যায়িত করবো, কারণ বাকি দুইটি নাম নিয়ে আমাদে মাঝে বিরাট বিভ্রান্তি ছড়িয়ে আছে।
لیلۃ مبارکۃ ‘ লাইলাতুম মুবারাকাহ’ এ জন্যে বলা যাবে না যে, এ নাম করণের কারণেই কেউ কেউ মনে করনে থাকেন সূরা দুখানের দ্বিতীয় আয়াতে এ রাতের কথাই বলা হয়েছে, যেমন সুরা দুখানে ইরশাদ হয়েছে:
حم (১) والكتاب المبين (২) إنا أنزلناه في ليلة مباركة إنا كنا منذرين (৩) فيها يفرق كل أمر حكيم (৪) أمرا من عندنا إنا كنا مرسلين (৫)
অর্থ:১. হা-মীম। ২.শপথ কিতাবের, যা (সত্যের )সুষ্পষ্টকারী। ৩.আমি এটা নাযিল করেছি এক মুবারক রাতে (কেননা) আমি মানুষকে সতর্ক করার ছিলাম।৪. এ রাতেই প্রতিটি প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয়/হেকমতপূর্ণ বিষয় আমার নির্দেশে স্থির করা হয়। (সূরা দুখান; আয়াত, ১-৪)
আবার এ সূরাতে একথাও বলা হয়েছে যে, এ রাতে অর্থাৎ (ليلة مباركة) কায় প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ ও হেকমতময় বিষয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
যেহেতু শবে বরাতের আর একটি নাম (ليلة مباركة) এলাইলাতুম মুবারকাহ- আর এ সুরাতে বলা হয়েছে (ليلة مباركة) লাইলাতুম মুবারকাকায় প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ ও হেকমতময় বিষয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, তাই শুধু নামের সাথে মিল থাকার কারণেই একদল বলে থাকেন, ভাগ্যলিপি ও এক বছরের বাজেট এ রাতেই পেশ করা হয়, আর এমন ধারণা পোষণ করা মোটেও ঠিক নয় ,কারণ সঠিক মত হচ্ছে বাজেট পেশ করা হয় কদরের রাতে।
এ পথ ধরেই তৃতীয় নামটির মধ্যেও একদল পরিবর্তন ঘটায়। নামটি ছিলো (لیلۃ البراءۃ) লাইলাতুল বারাআত, “লাইল” আরবী শব্দ যার অর্থ রাত এটি বাদ দিয়ে এর পরিবর্তে আনা হলো “ شب ” (শব) শব- শব্দের অর্থও রাত। আর براءۃ (বারাআত) আরবী শব্দটিকে পরিবর্তন করে বলা হলো برا ت (বরাত) পুরা নাম দ্বারালো: شب برا ت (শবে বরাত)।
براءۃ শব্দ থেকে প্রথমে আলিফের পরের গোল হামজাটাকে ফেলে দিয়ে গোল ‘তা’ কে লম্বা ‘তা’ দ্বারা পরিবর্তন করা হলো, ফলে براءۃ (বারাআত) আরবী শব্দটি; برا ت (বরাত)-ফারসী শব্দে রূপান্তরিত হলো। এবার براءۃ (বারাআত) ও برا ت (বরাত) শব্দদয়ের অর্থের মধ্যে আসমান যমীন ফারাক এসে গেল। কারণ কারণ براءۃ বারাআত শব্দের অর্থ: মুক্তি দেওয়া, কিষ্কৃতি দেওয়া আর
برا ت (বরাত) শব্দের অর্থ হচ্ছে তাকদীর বা ভাগ্য।
এবার লক্ষ করুন, براءۃ (বারাআত) শব্দটির মূল ধাতুর পরিবর্তনের সাথে সাথে তার অর্থের মধ্যেও আসমান-যমীন ফারাক এসে গেল।
সার কথা شب برا ت (শবে বরাত) এর অর্থ হচ্ছে বাজেটের রাত বা ভাগ্যলিপির রাত আর براءۃ شب (শবে বারাআত) এর অর্থ হচ্ছে মুক্তি দেওয়া বা কিষ্কৃতি দেওয়ার রাত।
আম মুসলমানগণ শবে বরাত মানে ভাগ্যলিপির রাতই মনে করে থাকেন, তাই তাদের দিলে এ বিশ্বাস জমে বসেছে যে, শবে বরাতেই আগামী এক বছরের বাজেট স্থির করা হয়।
প্রক্ষান্তরে এ রকম ধারণ পোষণ করাটা মোটেও ঠিক না, কারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ তাফসীরবেত্তাগণ এ মত পোষণ করেছেন যে, বাজেট পেশ করা হয় ক্বদরের রাতে বা শবে ক্বদরে, শবে বরাতে নয়।
দলীল স্বরুপ তাঁরা সূরা দুখানের এ আয়াত পেশ করেন। ইরশাদ হচ্ছে-
حم (১) والكتاب المبين (২) إنا أنزلناه في ليلة مباركة إنا كنا منذرين (৩) فيها يفرق كل أمر حكيم (৪)
অর্থ:১. হা-মীম। ২.শপথ কিতাবের, যা (সত্যের )সুষ্পষ্টকারী। ৩.আমি এটা নাযিল করেছি এক মুবারক রাতে (কেননা) আমি মানুষকে সতর্ক করার ছিলাম।৪. এ রাতেই প্রতিটি প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয়/হেকমতপূর্ণ বিষয় আমার নির্দেশে স্থির করা হয়। (সূরা দুখান; আয়াত, ১-৪)
তাফসীর: প্রতি বছর কোন ব্যক্তি জন্ম নেবে, তাকে কী পরিমাণ রিযিক দেওয়া হবে, কার মৃত্যু কবে হবে ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্থির করা হয় এবং তা কার্যকর করার জন্য সংশ্লিষ্ট ফেরেস্তাদের দায়িত্বে দেওয়া হয় কোরআন নাযিলের রাতে। আর কোরআন নাযিল হয়েছে রমযান মাসে, যেমন ইরশাদ হচ্ছে:
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي أُنْزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ
অর্থ:মাহে রমযান হলো সেই মাস, যে মাসে নাযিল করা হয়েছে কোরআনকে । (বাকারা; ১৮৫)
আর মাহে রমযানের যে রাতে কোরআন নাযিল করা হয়েছে সে রাতের নাম হচ্ছে, লাইলাতুল ক্বদরা বা শবে ক্বদর। মহান আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
إنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةِ الْقَدْرِ
অর্থ: নিশ্চয় আমি এটা (অর্থাৎ কুরআন) শবে ক্বদরে নাযিল করেছি।
(সূরা ক্বদর; ১)
সার কথা দ্বারায়, পবিত্র কুরআন মাজিদে বাজেটের রাত ঘোষণা করা হয়েছে কুরআন নাজিলের রাতকে আর কুরআন নাযিল হয়েছে রমযান মাসে শবে কদরে, বিধায় বাজেটও এ রাতেই স্থির করা হয়। বিধায় শবে বরাতে বাজেট ঘোষণা করা হয় এমন ধারণা পোষণ করা মোটেও ঠিক নয়, এমন ধারণা করা কোরআন সুন্নাহ বিরোধী, তাই সঠিক ধারণা পোষণ করা দরকার । হে আল্লাহ আমাদের সঠিক বুঝ দান করুন।আমীন।

Wednesday, May 10, 2017

অনন্য এবাদত নামায


মহান আল্লাহ পাক মানব ও দানব সৃষ্টির রহস্যের সুস্পষ্ট বর্ণনা দিয়েছেন, ঐশীগ্রন্থ আল-কুরআনে। তিনি এরশাদ করেছেন, 
وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ-
 অর্থ: আর আমি জ্বীন ও মানুষকে সৃষ্টি করেছি এজন্য যেন তারা শুধু আমারই বন্দেগী করে।( সূরা যারিয়াত; ৫৬) 
 এ আয়াত দ্বারা সুস্পষ্ট ভাবে প্রতীয়মান হয়যে, মানব ও জ্বীন জাতির সৃষ্টির রহস্য হল, ¯্রষ্ট্রা ও পালনকর্তা আল্লাহ পাকের বন্দেগী করা, আর এবন্দেগীর মাধ্যমেই মানবতার উৎকর্ষ সাধন সম্ভব। মানব জতিকে পৃথিবীতে যেহেতু আল্লাহ পাক তাঁর প্রতিনিধি রূপে প্রেরণ করেছেন, তাই মহান আল্লাহ পাক সমগ্র সৃষ্টি জগৎকে মানুষের সেবায় নিয়োজিত করে রেখেছেন, পবিত্র কোরআনেই রয়েছে এর ঘোষণা :
هُوَ الَّذِي خَلَقَ لَكُمْ مَا فِي الْأَرْضِ جَمِيعًا-
তিনিই সেই আল্লাহ পাক, যিনি তোমাদের উপকারার্থে সৃষ্টি করেছেন পৃথিবীর সব কিছু।   (আল-বাক্বারা ২৯)
 আল্লাহ পাক মানুষের রিযিকের যাবতীয় ব্যবস্থা জমীনের অভ্যন্তরে রেখে দিয়েছেন। যে যখনই যথা নিয়মে জমীনের উপর মেহনত করে, আল্লাহ পাক তার কাম্য বস্তু দান করেন, আর এ উদ্দেশ্যে আল্লাহ পাক বন্দার জন্যে আসমান থেকে বারি বর্ষণ করেন, চন্দ্র-সুর্য দ্বারা আলো বিতরণ করেন,বীজ থেকে অঙ্কুেরাদগম করেন, ক্রমে ক্রমে তা হতে নানান জাতের শষ্য ও ফলমূলের ব্যাপক সমারহ করেন। তাই বান্দার কর্তব্য হলো, আল্লাহ পাকের অনন্ত-অসীম নেয়ামত ভোগ করে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা এবং তাঁর বন্দেগী করা। এপর্যায়ে প্রথম কর্তব্য হলো আল্লাহ পাকের তৌহীদ বা একত্ববাদে বিশ্বাস স্থাপন করা, শিরক বর্জন করা এবং আল্লাহ পাকের যাবতীয় বিধি-নিষেধ পালন করা। এখানে একথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে , আল্লাহ পাকের বন্দেগী শুধু কয়েকটি নিদিষ্ট এবাদতের মধ্যেই সীমিত নয়; বরং জীবনের সকল ক্ষেত্রে মানুষের যাবতীয় কর্মকান্ড যথা পানাহার, আয়-রোজগার, বিয়ে-শাদী এক কথায় সব কিছু হতে হবে আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে এবং তাঁর পছন্দনীয় তরীকায়। আল্লাহ পাক কোরআনে কারীমে এসত্যটিকে এভাবে ঘোষণা করেছেন:
قُلْ إنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
(হে রসূল!) আপনি ঘোষনা করুন, নিশ্চয় আমার নামাজ, আমার কোরবানী এবং আমার জীবন ও মরণ বিশ্ব-প্রতিপালক আল্লাহই জন্যে।
মরমী কবি তাই বলেছেন
نوشيدنش تابع حق را ديدنش نا ديدنش দ্ধ خوردنش خوابيدنش
বান্দার দেখা না দেখা সব কিছুর মধ্যেই থাকতে হবে আল্লাহ পাকের তাবেদারী,তার পানাহারে মাঝে এমনকি নিদ্রগমনেও।
قرب حق از هرعمل مقصود دار দ্ধ  تازتوگردد جلالش آشكار
প্রত্যেকটি কাজের উদ্দেশ্য হতে হবে আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি লাভ,আর শুধু এভাবেই তোমার দ্বারা আল্লাহ পাকের কুদরতের বহিঃপ্রকাশ ঘটবে। এক কথায় মানুষের দুনিয়াবী জীবনে একমাত্র লক্ষ্য হবে আল্লাহ পাকের এবাদত। আর যাবতীয় এবাদতের মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ এবাদত হল নামাজ। আমরা জানি যে ইসলাম ধর্ম পাঁচটি ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। নামাজ তার মধ্যে অন্যতম এবং এবাদতের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। তাই পবিত্র কুরআনে ৮২ জায়গায় নামাজ কায়েম করার জন্য সুস্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে। ইসলামে সালাতের গুরুত্ব যেমন অপরিসীম তেমনি আল্লাহ পাকের রহমত এবং ইহ-পরোকালের মুক্তিলাভের প্রধান প্রধান অবলম্বন হিসাবে নামাজ বিশেষ তাৎপর্যবহ।
নামজের  গুরুত্ব ও তাৎপর্য   
নামাজের মাধ্যমে একজন মানুষ আল্লাহ পাকের সাথে দেয়া প্রতিশ্রুতির বার বার প্রতিফলন ঘটায়। সে তার প্রভু বা ¯্রষ্টাকে বুঝাতে সক্ষম হয় যে, সে তার প্রতিশ্রুতি পালন করে যাচ্ছে। এ নামাজের মাধ্যমেই মানুষ আল্লাহ পাকের নৈকট্য লাভ করে। স্বর্গীয় প্রেমের ভুবনে নামাজ হল অতুলনীয়। এর মাধ্যমে সরাসরি ভাবে আল্লাহ পাকের সাথে বান্দার সম্পর্ক স্থাপন হয়। যেমন হাদীস শরীফে রসূলুল্লাহ স. বলেন যে, আল্লাহ পাক ঘোষণা করেন:“ আমি নামাজ কে আমার এবং আমার বান্দার মাঝে অর্ধ অর্ধ করে ভাগ করেছি এবং আমার বান্দা আমার কাছে যা চায় তা আমি তাকে দিয়ে থাকি। যখন বান্দা বলে الحمد لله رب العالمين ,তখন আল্লাহ পাক বলেন: আমার বান্দা আমার প্রশংসা করলো। বান্দা যখন বলে,  الرحمن الرحيمতখন আল্লাহ বলেন: আমার বান্দা আমার গুণাগুণ বর্ণনা করলো
। বান্দা যখন বলে, مالك يوم الدين তখন আল্লাহ পাক বলেন: আমার বান্দা আমার মহাত্ম্য বর্ণনা করলো। কোন কোন বর্ণনায় আছে যে আল্লাহ পাক উত্তরে বলেন:  فوض الي عبدي অর্থাৎ, বান্দা আমার উপর (সবকিছু)সমর্পণ করলো।অতঃপর, যখন বান্দা বলে,
  إياك نعبد وإياك نستعين তখন আল্লাহ পাক বলেন: এটা আমার এবং আমার বান্দার মধ্যেকার কথা, এবং আমার বান্দা আমার কাছে যা চাইবে আমি তাকে তাই দেবো। অতঃপর বান্দা যখন শেষ পর্যন্ত পড়ে, শুগ্ম প্রশস্ত
 اهدنا الصراط المستقيم صراط الذين أنعمت عليهم غير المغضوب عليهم ولا الضالين
তখন আল্লাহ পাক বলেন: এসব আমার বান্দার জন্য এবং সে যা চায় তা সবই তার জন্য।
এজন্য মানুষের আভ্যন্তরীণ পরিবর্তনে নামাজ হল মূল চালিকা শক্তি। এজন্য নামাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আল্লাহ পাকের সাথে মানুষের সম্পর্কের বন্ধন সুদৃঢ় ও মজবুত হয়। ইহকাল ও পরকালের মুক্তির পথ হয় সুগম ও সুপ্রশস্ত। সালাত ব্যক্তি, পরিবার, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে শান্তি, শৃঙ্খলা, ভ্রাতৃত্ব ও মমতাবোধ উজ্জীবিত করে- গড়ে উঠে সামাজিক ঐক্য। নামাজ এমন এক এবাদত যার দ্বারা দিনে পাঁচ বার আল্লাহ পাকের সাথে বান্দার সম্পর্ক তৈরী হয়। মেরাজের রজনীতে আল্লাহ পাক নামাজ ফরজ করেন। প্রথমে পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয়, তার পর আল্লাহ পাক মানুষের প্রতি দয়া করে পাঁচ ওয়াক্তে নিয়ে আসেন। তবে আজর ও সওয়াব পঞ্চাশ ওয়াক্তের-ই চালু রাখেন। সুতরাং নামাজী বাক্তি বাহ্যিক ভাবে পাঁচ ওয়াক্ত পড়লেও প্রকৃত পক্ষে আল্লাহ পাক তাকে পঞ্চাশ ওয়াক্তেরই সওয়াব প্রদান করেন। নামাজ এমন এক এবাদত যা আল্লাহ পাক সাত আসমানের উপরেই ফরজ করাকে শ্রেয় মনে করেছেন।
মেরাজের রজনীতে আল্লাহ পাক কোন প্রকার মাধ্যম ছাড়াই নামাজের হুকুম প্রদান করেন। এতে সালাতের অপরিসীম গুরুত্ব ও ফজীরলতেরই প্রতিফলন ঘটেছে। আল্লাহ পাকের একত্ববাদ ও রেসালাতের প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের পর গুরুত্বপূর্ণ রুকন হচ্ছে নামাজ। হাদীস শরীফে আল্লার নবী বলেন:
بني الإسلام على خمس، شهادة أن لا إله إلا الله، وأن محمداً رسول الله، وإقام الصلاة، وإيتاء الزكاة، و صوم رمضان، وحج البيت. رواه البخاري  و مسلم
অর্থাৎ, ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি : ১- এ কথার সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন সত্যিকার ইলাহ নেই এবং মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ পাকের রাসূল। ২-নামাজ কায়েম করা। ৩-জাকাত প্রদান করা। ৪-রমজানের রোজা রাখা। ৫-বাইতুল্লাহর হজ্ব করা। (বোখারি ও  মুসলিম )
 রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন -
رأس الأمر الإسلام، وعموده الصلاة، و ذروة سنامه الجهاد.رواه الترمذي
অর্থাৎ,সবকিছুর মূল হল ইসলাম, আর ইসলামের খুঁটি নামাজ, আর ইসলামের শীর্ষ পীঠ হল জিহাদ। (তিরমিযি শরীফ)
নামাজ হচ্ছে আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় ও সর্বোত্তম আমল। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
استقيموا ولن تحصوا، واعلموا أن خير أعمالكم الصلاة، ولن يحافظ على الوضوء إلا مؤمن. رواه ابن ماجة
তোমরা অটুট ও অবিচল থাক, গণনা করো না, আর মনে রাখবে তোমাদের সর্বোত্তম আমল হল নামাজ, একজন মোমিন অবশ্যই সর্বদা ওজু সংরক্ষণ করতে থাকে। (ইবনে মাজাহ)
নামাজ হল নূর- রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন :
الطهور شطر الإيمان، والحمد لله تملأ الميزان، وسبحان الله والحمد لله تملان أو تملأ ما بين السماء والأرض، والصلاة نور، والصدقة برهان، والصبر ضياء، والقرآن حجة لك أو عليك. رواه مسلم
অর্থাৎ,পবিত্রতা ঈমানের অর্ধেক আর আলহামদুলিল্লাহ মিযানের পাল্লাকে সম্পূর্ণ করে, সুবহানাল্লাহ ও আলহামদুলিল্লাহ আসমান ও জমিনের মধ্যবর্তী স্থানকে নেকির দ্বারা পূর্ণ করে। সালাত নূর বা আলো। দান খয়রাত ক্বিয়ামতের দিন মুমিনের দলীল হিসাবে প্রকাশ পাবে, ধৈর্য প্রকাশ পাবে উজ্জলতা হিসাবে আর কোরআন হাজির হবে বান্দার পক্ষে বা বিপক্ষে সাক্ষ্যদাতা  হিসাবে । (মুসলিম)
নামাজ হল আল্লাহ পাকের  নৈকট্য ও উচ্চ-মর্যাদা লাভের একমাত্র উপকরণ। হযরত সাওবান (রা:) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এমন আমল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন যা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তরে বললেন, তুমি বেশি করে আল্লাহ পাকের জন্য সেজদা(নামাজ) আদায় করতে থাক, কারণ তোমার প্রতিটি সেজদার কারণে আল্লাহ পাক তোমার মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন এবং তোমার গুনাহ মাপ করবেন। (মুসলিম )
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন :
أقرب ما يكون العبد من ربه وهو ساجد، فأكثروا الدعاء. رواه مسلم
বান্দা আল্লাহ পাকের সবচেয়ে নিকটবর্তী হয় ঐ সময়ে যখন সে সেজদারত থাকে। সুতরাং তোমরা সেজদার অবস্থায় বেশি বেশি প্রার্থনা কর। (মুসলিম)
ক্বিয়ামতের দিন সর্ব প্রথম বান্দার নামাজের  হিসাব নেয়া হবে। তাতে হয় সে মুক্তি পাবে অথবা ধ্বংস হবে। জনাব রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
أول ما يحاسب به العبد يوم القيامة الصلاة، فإن صلحت صلح سائرعمله، وإن فسدت فسد سائر عمله. رواه الترمذي
কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম বান্দার নামাজের হিসাব হবে। যদি নামাজ ঠিক হয় তবে তার সকল আমল সঠিক বিবেচিত হবে। আর যদি নামাজ বিনষ্ট হয় তবে তার সকল আমলই বিনষ্ট বিবেচিত হবে। (তিরমিযি)
যাদের নামাজ ঠিক হয়ে যায় তাদের অন্যান্য সমস্ত এবাদত ও কর্মও ঠিক হয়েযায়।
হযরত উমার (র.) খলীফাতুল মুসলিমীন হওয়ার পর তার গভর্নরদের প্রতি একটি নির্দেশ নামা পঠিয়েছিলেন তাতে লেখা ছিল “আমার নিকট তোমাদের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে নামাজ। বিধায় যারা নিজ নামাজের ক্ষেত্রে নিষ্ঠাবান ও যতœবান হবে তারা দ্বীন-ধর্মের  হেফাজতকারী বলে গণ্যহবে। আর যারা নিজেদের নামাজ নষ্ট করবে, তারা তদের আন্যান্য সৎকর্মকে সর্বাধিক বিনষ্টকারী বলে গণ্য হবে।”
 রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন
 رواه أحمد. العهد الذي بيننا وبينهم الصلاة، فمن تركها فقد كفر
আর্থাৎ, আমাদের ও তাদের (মুনাফেকদের) মধ্যে যে অঙ্গীকার রয়েছে তা হচ্ছে নামাজ আদায় করা, সুতরাং যে নামাজ ত্যাগ করবে সে (প্রকাশ্যে) কাফের হয়ে যাবে।
ব্যাখ্যা: রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন। আমরা যে মুনাফেকদের জান-মালের নিরাপত্তা দিয়েছি তা এই জন্য যে, তারা আমাদের ন্যায় নামাজ পড়বে ও জামাতে আসবে। অন্যথায় তাদের ঈমানকে তো আমরা দেখিনা। বিধায় যারা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ এবাদত নামাজ ত্যাগ করলো তারা তাদের কুফুরীকে প্রকাশ করে দিল। এজন্য প্রতিটি মুসলমানের এ ব্যপারে সতর্ক হওয়া দরকার যে, তারা যেন নামাজ ত্যাগের মাধ্যমে নিজেদের কুফুরিকে প্রকাশ না করে।
অন্য বর্ণনায় এসেছে- নামাজ ত্যাগের দ্বারা বান্দা ও কুফুরের মধ্যেকার প্রাচীর ভেঙ্গে যায়। ব্যাখ্যা ঃ মুমিন ও কুফুরীর মধ্যে নামাজ হল প্রাচীরের ন্যায়, এ প্রাচীরের (নামাজের) কারণে বান্দা কুফুরীর সীমানায় প্রবেশ করতে পারেনা। আর যখন নামাজ ত্যাগ করে তখন তার এ প্রাচীর ভেঙ্গে যায়, তখন সে কুফুরীর সীমানায় ডুকে যায়, বিধায় নামাজ ত্যাগের দ্বারা সে কুফুরী পর্যন্ত পৌছে যায়।

নামাজের ফায়দা ও উপকারিতা

নামাজ হল মুমিনের পাপ মোচনকারী এবং ছোট ছোট গুনাহের প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন :
الصلوات الخمس والجمعة إلى الجمعة كفارات لما بينهن. رواه مسلم
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এবং এক জুমা হতে আরেক জুমা উভয়ই তার  মধ্যবর্তী গুনাহ সমূহের জন্য কাফ্ফারা স্বরুপ , যতক্ষণ পর্যন্ত নামাজী ব্যক্তি কবিরা গুনাহে লিপ্ত না হয়। (মুসলিম) 
এবং রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাজের দ্বারা পাপমোচনের একটি উদাহরণ এভাবে প্রদান করেছেন :
أرأيتم لوأن نهراً بباب أحدكم، يغتسل فيه كل يوم خمس مرات، هل يبقى من درنه شيء ؟ قالوا لا يبقى من درنه شيء، قال فكذلك مثل الصلوات الخمس، يمحو الله بهن الخطايا. رواه مسلم
যদি তোমাদের কারো বাড়ির দরজায় একটি নদী থাকে আর তাতে সে দৈনিক পাঁচবার গোসল করে, তাহলে তার শরীরে কি কোন ময়লা আবর্জনা অবশিষ্ট থাকে? সাহাবিরা উত্তরে বললেন, না। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের দৃষ্টান্ত এমনি। দিনে পাঁচবার নামাজ  আদায় করার দ্বারা আল্লাহ পাক বান্দার গুনাহ গুলিকে ধুয়ে মুছে ফেলেন। (মুসলিম)

জনাব রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো একটি দৃষ্টান্ত দিয়েছেন:
إن العبد المسلم ليصلي الصلاة يريد بها وجه الله، فتهافت عنه ذنوبه، كما يتهافت هذا الورق عن هذه الشجرة. رواه أحمد
অর্থাৎ,মুসলিম বান্দা যখন একমাত্র আল্লাহ পাকের  সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে নামাজ আদায় করে তখন তার গুনাহ এমনভাবে ঝরে পড়তে থাকে যেমন এই বৃক্ষের পাতা ঝরে পড়ে। (আহমদ )

পরিবারবর্গ ও সম্পর্কশীলদের নামাজের আদেশ ও তার রহস্যঃ
وَأْمُرْ أَهْلَكَ بِالصَّلَاةِ وَاصْطَبِرْ عَلَيْهَا لَا نَسْأَلُكَ رِزْقاً نَّحْنُ نَرْزُقُكَ وَالْعَاقِبَةُ لِلتَّقْوَى (ত্বোয়া-হা
;১৩৩) অর্থাৎ, আপনি পরিবারবর্গকে নামাজের আদেশ দিন  এবং নিজেও এর উপর অবিচল থাকুন। বাহ্যতঃ এখানে আলাদা আলাদা দুটি নির্দেশ রয়েছে। (ক) পরিবারবর্গকে নামাজের আদেশ এবং(খ) নিজেও নামাজ অব্যাহত রাখা । কিন্তু চিন্তা করলে দেখা যায় যে, নিজের নামাজ পুরোপুরি অব্যাহত রাখার জন্যেও আপনার পরিবেশ, পরিবারবর্গ ও স্বজনদের নিয়মিত হওয়া আবশ্যক। কেননা পরিবেশ ভিন্নরূপ হলে মানুষ স্বভাবত নিজেও অলসতার শিকার হয়ে যায়।স্ত্রী, সন্তান-সন্ততি ও সম্পর্কীয় সবাই ‘আহলের’ অন্তর্ভুক্ত। এদের দ্বারা মানুষের পরিবেশ ও সমাজ গঠিত হয়। এ আয়াত অবতীর্ণ হলে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যহ ফজরের নামাজের সময় হযরত আলী ও ফতেমা (রাঃ)-এর গৃহে গমন করে  الصَّلَاةَ الصَّلَاةَ (নামাজ পড়, নামাজ পড়)বলতেন। মাআরেফুল কোরআন । ধনকুবের ও রাজারাজড়াদের ধনৈশ্বর্য ও জাঁকজমকের উপর যখনই  হযরত ওরওয়া ইবনে যোবায়েরের দৃষ্টি পড়ত , তখনই তিনি নিজ গৃহে ফিরে আসতেন এবং পরিবারবর্গকে নামাজ পড়ার কথা বলতেন।অতঃপর আলোচ্য আয়াত পাঠ করে শোনতেন। হযরত ওমর ফারুক (রাঃ) যখন রাত্রিকালে তাহাজ্জুদের জন্য জাগ্রত হতেন, তখন পরিবারবর্গকেও জাগ্রত করে দিতেন।এবং এই আয়াত পাঠ করে শোনাতেন। 
যে ব্যক্তি নামাজ ও এবাদতে আত্মনিয়োগ করে , আল্লাহ পাক তার রিযিকের ব্যপার সহজ করে দেন।
لَا نَسْأَلُكَ رِزْقاً - অর্থাৎ, আমি আপনার কাছে এই দাবী করি না যে, আপনি নিজের ও পরিবারবর্গের রিযিক নিজস্ব জ্ঞান-গরিমা ও কর্মের জোরে সৃষ্টি করুন। বরং এ কাজটি আমি আমার নিজের দায়িত্ব রেখেছি।কেননা, রিযিক উপার্জন করা প্রকৃতপক্ষে মানুষের সাধ্যাতীত ব্যাপার। সে বেশীর মধ্যে মাটিকে নরম ও চাষোপযোগী করতে পারে এবং তাতে বীজ নিক্ষেপ করতে পারে।, কিন্তু বিজের ভেরত থেকে অঙ্কুর উৎপন্ন করা এবং তাকে ফলে-ফুলে সুশোভিত করার মধ্যে মানুষের কোন হাত নেই। এটা সরাসরি আল্লাহ পাকের কাম।বৃক্ষ গজানোর পরও মানুষের সকল প্রচেষ্টা তার হেফাজত ও আল্লাহ কর্তিক সৃজিত ফল-ফুল দ্বারা উপকৃত হওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। যে ব্যক্তি আল্লাহ পাকের এবাদতে মশগুল হয়ে যায়, আল্লাহ পাক এই পরিশ্রমের বোঝাও তার জন্য সহজ ও হালকা করে দেন।  
নামাজের ফায়দা ও উপকারিতা সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক নিজ ভাষায় এভাবে  ঘোষণা দেন,
وَأَقِمِ الصَّلَاةَ إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَر. العنكبوت
নিশ্চয় নামাজ (নামাজীকে) অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে। আল-আনকাবুত; ৪৬
নামাজ,মানন সংশোধনের পূর্ণ ব্যবস্থাপত্র
অন্যায় ও অপরাধ দমনের অভিনব পদ্ধতি অবিস্কার হয়ে আসছে যুগযুগ ধরে।যখনই যেখানে দুষ্কৃতকারীরা অন্যায় ও অপরাধে লিপ্ত হয়েছে তখনই তাদের দমন করার জন্য কালের কর্ণধারেরা প্রণয়ন করে ছিলো নতুন নতুন ধারার আইন। আবশ্য তাদের এ প্রচেষ্টার ফল তারা সাময়িক ভাবে পেয়ে ছিলো কিন্তু স্থায়ী ভাবে এ সমস্যসার সমাধান তারা খুঁজে পায়নি এবং কস্মিনকালেও তা সম্ভব না, ইতিহাস তার জলন্ত প্রমাণ। বর্তামান বিশ্বের প্রতিটি রাষ্ট্রে নিরলস ভাবে এ প্রচেষ্টাই চালানো হচ্ছে যে, রাষ্ট্রে কি করে শান্তি,শৃঙ্খলা ফিরে আসবে এবং অন্যায় অপরাধ দূর হবে। কিন হচ্ছে তার উল্টটা مرض بڑھتا گیا جوں جوں دواکا নতুন নতুন ঔষধ যেমন আস্কিার হচ্ছে তেমনি রোগ ও বেড়েই চলেছে।বর্তমানে অন্যায় ও অপরাধ দমনে দেশী ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গ্রহণ করা হচ্ছে নানা ব্যবস্থা কিন্তু তাদের এ চেষ্টা ফল প্রসূ হচ্ছেনা। আধুনিক বিজ্ঞান তার সর্বশেষ প্রচেষ্টা ব্যয় করছে এর পিছে এবং অন্যায় ও অপরাধ দমনে উপহার দিয়েছে বিশ্ব বাসীকে অত্যাধুনিক যন্ত্র সাথে সাথে গড়ে উঠেছে দেশে দেশে দক্ষ বাহিনী কিন্তু কই! অন্যায় ও অপরাধ কি আদৌ দমন হচ্ছে? উত্তরোত্তর তো বেড়েই চলেছে । ব্যর্থতা ছাড়া সফলতার ছায়াও তার পর্স্প করতে পারেনি।এ অবস্থা অবলকন করার জন্য বিশ্বের প্রতিটি রাষ্ট্রের প্রতি একটু নজর বুলান। পক্ষান্তরে মানব ও মানবতার এ জটিল সমাস্যার স্থায়ী সমাধান দিয়েছে আল-কোরআন এরশাদ হচ্ছে 
وَأَقِمِ الصَّلَاةَ إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَر. العنكبوت
নিশ্চয় নামাজ (নামাজীকে) অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে। আল-আনকাবুত; ৪৬
আয়াতে ব্যবহৃত الْفَحْشَاء   শব্দের অর্থ এমন সুস্পষ্ট মন্দ কাজ যাকে মোমেন ও কাফের বির্বিশেষে প্রত্যেক বুদ্ধিমান ব্যক্তিই মন্দ মনে করে; যেনম ব্যভিচার,অন্যায়, হত্যা,চুরি ডাকাতি ইত্যাদি।পক্ষান্তরে الْمُنْكَر এমন কাজকে বলা হয়, যার হারাম ও অবৈধ হওয়ার ব্যপারে শরীয়ত বিশারদগণ একমত। এক কথায় الْفَحْشَاء   ও الْمُنْكَر শব্দদ্বয়ের মধ্যে যাবতীয় অপরাধ  এবং প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য গোনাহ দাখিল হয়ে গেছে। যেগুলো  নিঃসন্দেহরূপে  সৎকর্মের পথে সর্ববৃহৎ বাধা। গভীর ভাবে লক্ষ করলে আমরা বুঝতে পারবো যে মানব রচিত বিধান দ্বারা শুধু সাময়ীক প্রকাশ্যে যে সমস্ত অন্যায় ও অপরাধ সংঘটিত হয় তা দমন করা সম্ভব কিন্তু অপ্রকাশ্যে এবং রাতের অন্ধকারে যে সমস্ত অপরাধ সংঘটিত হয় তা কোন বাহিনী বা মানব রচিত বিধান দ্বারা দমন করা কস্মিনকালেও সম্ভব নয়। তবে হাঁ যে সমস্ত অপরাধ মানষের অগচরে-গুপনে,রাতের অন্ধকারে যার কোন খবর পৃথিবীর কেউ রাখতে পারেনা এমন অপরাধ দমনের গ্যারান্টি দিচ্ছে একমাত্র নামাজ। কারণ নামাজে দন্ডয়মান হওয়ার কারণে মানব মনে আল্লাহ পাকের শ্রেষ্ঠত্ব ও মহাত্মের যে উপলদ্ধি আসে তা অন্যায় অশ্লীল কাজ থেকে মানুষকে অবশ্যই বিরত রাখে। তত্ত্বজ্ঞানীগণ বলেছেন, নামাজের কারণে মানব মনে আল্লাহ পাকরে ভয়ের উদ্রেক হয় আর তা মানুষকে পাপাচার থেকে বিরত থাকতে সাহায্য করে। যে ব্যক্তি আল্লাহ পাকের মহান দরবারে নামাজের মাধ্যমে হাযির হয়, নিজের দীনতা-হীনতা স্বীকার করে এবং বিনয় প্রকাশ করে, জীবনের কৃত অন্যায়ের জন্যে ক্ষমা প্রার্থী  হয়  এবং আল্লাহ পাকের আযাবের ভয়ে ভীত –সন্ত্রস্ত  হয়, তার পক্ষে নামাজের পর পুনরায়  পাপাচারে লিপ্ত হওয়া কি করে সম্ভব হতে পারে! নামাজী ব্যাক্তি যখন দরবারে এলাহীতে হাযির হয়, তার প্রত্যেকটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আল্লাহ পাকের অনুগত্য প্রকাশ করে, তার অন্তর সর্বশক্তিমান আল্লাহ পাকের ভয়ে কম্পমান থাকে, সে প্রথমে দন্ডয়মান অবস্থায়, পরে রুকু অবস্থায়,অবশেষে সেজদারত হয়ে আল্লাহ পাকের দরবারে মিনতি প্রকাশ করে, এরপর তার পক্ষে অন্যায়-অশ্লীল কাজে লিপ্ত হওয়া সম্পূর্ণ অকল্পনীয়। এখানে একটা কথা  বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য যে, নামাজ রুকু ,সেজদা ,আরকান আহকাম যথা নিয়মে হতে হবে। আল্লামা বগভী রহ. হযরত আনাস র. বর্ণিত হাদীসের উদ্ধৃতি দিয়ে ছেন।তিনি বর্ণনা করেছেন, একজন আনছারী যুবক হযরত রসূলে করীম স. সঙ্গে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতেন।কিন্তু এতদসত্ত্বেও সে বিভিন্ন প্রকার পাপাচারে লিপ্ত  হতো তার এ অবস্থা সর্ম্পে প্রিয়নবী স. কে অবহিত করা হয়। তখন তিনি এরশাদ করেন, তার নামাজ তাকে একদিন এসব গুনাহ থেকে বিরত করবে। কিছুদিন পর তাই হলো । সে তওবা করে ফেললো এবং তার অবস্থ ঠিক হয়ে গেল। আধুনিক ব্যাখ্যাকারগণ এর একটি দৃষ্টান্ত দিয়েছেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বসন্ত-কলেরার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার লক্ষে  যেভাবে টীকা বা ইনজেকশন দিয়ে থাকেন এবং তার দ্বারা উপকারও হয়, ঠিক তেমনি অন্যায়-অশ্লীলতা এক কথায় পাপের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যে নামাজ প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।যেভাবে যথা নিয়মে নামাজ ঔষধ সেবন, ইনজেকশন গ্রহণ রোগ নিরাময়ের জন্য বা রোগ আক্রমণ থেকে আত্মরক্ষার জন্যে জরুরী মনে করা হয়,  ঠিক তেমনি যথা নিয়মে নামাজ আদায়ের মাধ্যমেও মানব মন পাপাচার থেকে পবিত্রতা অর্জন করতে পারে। নামাজে আন্তরিকতা, মনের একাগ্রতা ,আল্লাহ পাকের ভয়, তাঁর রহমতের আশা, আল্লাহ পাকের শ্রেষ্ঠত্বের উপলদ্ধি যত অধিক পরিমাণে হবে , নামাজ তত বেশী পাপাচার থেকে বিরত রাখতে সফল হবে। একজন নামাজী ব্যক্তি নামাজের যাবতীয় কল্যান ওই সময় পাবে যখন সে “اقامت صلوٰة  ”করবে। কোরআন কারীমে যতবার নামাজের তাগীদ দেওয়া হয়েছে সাধারণত “اقامت صلوٰة ” শব্দের মাধ্যমেই দেওয়া হয়েছে। নামাজ পড়ার কথা শুধু দু’এক জায়গায় বলাহয়েছে।এজন্য “ اقامت صلوٰة ”( নামাজ প্রতিষ্ঠা)-এর মর্ম অনুধাবন করা উচিত । اقامت-এর শাব্দিক অর্থ সোজাকরা, স্থায়ী রাখা। সাধারণত যেসব খুঁটি দেওয়াল বা গাছ প্রভৃতির আশ্রয়ে সোজাভাবে দাঁড়ানো থাকে , সে গুলো স্থায়ী থাকে এবং পড়ে যাওয়ার আশংকা কম থাকে। এজন্য স্থায়ী ও স্থিতিশীলকরণ অর্থেও ব্যবহার হয়।কোরআন সুন্নাহ্র পরিভাষায় “اقامت صلوٰة ” অর্থ নির্ধারিত সময় অনুসারে যাবতীয় শর্ত ও নিয়ম রক্ষা করে নামাজ আদায় করা। শুধু নামাজ পড়াকে “اقامت صلوٰة ”  বলা হয়না। নামাজের যত গুণাবলী , ফলাফল , লাভ ও বরকতের কথা কোরআন হাদীসে বর্ণনা করা হয়েছে তা সবই “اقامت صلوٰة  ” ( নামাজ প্রতিষ্ঠা)-এর সাথে সম্পর্কযুক্ত। এ জন্য প্রতিটি নামাজী ব্যক্তির জন্য এই সমস্ত বিষয়ের পূর্ণ জ্ঞান রাখা দরকার যা তার নামাজ প্রতিষ্ঠা করতে লাগে, তা না হলে সে নামাজের কল্যাণ, ও বরকত হতে মাহরুম হবে। তাই এখন নামাজের গুরুত্বপূর্ণ মাসেয়েল নিয়ে আলোচনা করা হবে ইনশাআল্লাহ।
নামাজ আরম্ভ করার পুর্বে যে সমস্ত কাজ অবশ্য কর্তব্য।
১। শরীর পাক হওয়া।
২। কাপড় পাক হওয়া।
৩। নামাজের জায়গা পাক হওয়া।
৪। ছতর ঢাকা।
৫। ক্বেবলা মুখি হওয়া।
৬। নিয়ত করা।
৭। নামাজের ওয়াক্ত হওয়া।
নামাজের পূর্বেই নামাজীকে আবশ্যই ছোট নাপাক ও বড় নাপাক থেকে শরীর পাক করে নিতে হবে। বড় নাপকা থেকে শরীর পাক করার একমাত্র উপায় হল গুসল করা।
এবার আসুন জেনে নেই গুসল ফরজ হয় কখন।
১। খাহেসের সাথে, উত্তেজনার সাথে বীর্য ক্ষরণ হলে, বীর্য বের হলে গুসল ফরজ হয়, চাই পুরুষের হোক বা মহিলার, ঘুমন্ত অবস্থায় হোক বা জাগ্রত অবস্থায়।
 ২। সহবাসে দ্বারা চাই নিজ স্ত্রীর সাথে হোক বা অবৈধ পন্থায় হোক বীর্যর্  বের হোক অথবা না হোক।
নারীর নির্ধারীত গুসল
 ৩।যখন ঋতু¯্রাবের রক্তপাত শেষ হয়ে যাবে, তখন নারীকে নামাজ বা যে কাজ গুলির জন্য পবিত্র থাকা আবশ্যক সে গুলি আঞ্জাম দেয়ার জন্য তার গুসল করা ফরজ।
রক্তপাত ৩ দিনের কম হবেনা, অতএব যদি তিন দিনের আগে শেষ হয়ে যায়, তবে তা ঋতু¯্রাবের রক্ত নয় বরং এটা এসতেহাযার রক্ত।
এবং দশ দিনের বেশিও থাকবেনা, অতএব যদি দশ দিনের বেশি থাকে তাহলে দশ দিনের পর থেকে সে গুলো এসতেহাযার রক্ত বলে গণ্য হবে। 
খ) - রক্তপাত ৩ দনিরে কম হবে না, অতএব যদি তনি দনিরে আগে শষে হয়ে যায়, তবে তা ঋতুস্রাবরে রক্ত নয়।
গ) - রক্তপাত দশ দনিরে বশেি থাকবে না, অতএব যদি দশ দনিরে বশেি থাকে তাহলে দশ দনি পর থকেে ঋতুস্রাবরে রক্ত নয় বরং তা এসতহোযার রক্ত বলে পরগিণতি হব।ে
নামাজ আরম্ভ করবিার র্পূবে যে সমস্ত কাজ অবশ্য র্কতব্য, তাহাকে নামাযরে র্শত বলে । ইহা আটট;ি যথা :-
১) শরীর পাক-পবত্রি করয়িা লওয়া, র্অথাৎ অযু কংিবা গোসলরে প্রয়োজন হইলে তাহা আদায় করয়িা লইতে হইবে ।
২) পোষাক পাক হওয়া । যদি কাপড়ে কোন নাপাক বস্তু নাগয়িা থাকে তাহা ধুইয়া পাক করয়িা লইবে অথবা উহা পরর্বিতন করয়িা পাক-পবত্রি কাপড় পরধিান করয়িা লইতে হইবে ।
৩) স্থান পাক হওয়া -র্অথাৎ যে স্থানে দাঁড়াইয়া নামায পড়বি,ে তাহা পাবত্রি হওয়া ।
৪) ছতর ঢাকয়িা লওয়া – র্অথাৎ নামায পড়বিার সময়ে পুরুষরে নাভী হইতে ও স্ত্রীলোক হইলে মুখ, হাতরে কব্জা ও পায়রে তলা ব্যতীত সমুদয় শরীর ঢাকয়িা লওয়া কন্তিু বাদী হইলে পটে, পঠি, র্পাশ্ব ও নাভী হইতে জানুর নীচ পযন্ত কাপড় দ্বারা ঢাকয়িা লওয়া ফরয ।
৫) কাবা শরীফরে দকি মুখ করয়িা দাঁড়ান ।
৬) নর্দিষ্টি ওয়াক্তে নামাজ আদায় করা । নয়িত করা-যে ওয়াক্তরে নামায পড়বি,ে তাহার নয়িত করা ।
৭) তাকবীরে তাহরীমা বলা । র্অথৎ নামাজরে নয়িত করয়িা “আল্লাহু আকবার” বলয়িা নামায আরম্ভ করা।
নামাযরে রোকনসমূহ


      



















অনন্য এবাদত নামায

রচানায়

আব্দুল আহাদ
গুরুদাসপুর,নাটোর

মহান আল্লাহ পাক মানব ও দানব সৃষ্টির রহস্যের সুস্পষ্ট বর্ণনা দিয়েছেন, ঐশীগ্রন্থ আল-কুরআনে। তিনি এরশাদ করেছেন, 
وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ-
 অর্থ: আর আমি জ্বীন ও মানুষকে সৃষ্টি করেছি এজন্য যেন তারা শুধু আমারই বন্দেগী করে।( সূরা যারিয়াত; ৫৬) 
 এ আয়াত দ্বারা সুস্পষ্ট ভাবে প্রতীয়মান হয়যে, মানব ও জ্বীন জাতির সৃষ্টির রহস্য হল, ¯্রষ্ট্রা ও পালনকর্তা আল্লাহ পাকের বন্দেগী করা, আর এবন্দেগীর মাধ্যমেই মানবতার উৎকর্ষ সাধন সম্ভব। মানব জতিকে পৃথিবীতে যেহেতু আল্লাহ পাক তাঁর প্রতিনিধি রূপে প্রেরণ করেছেন, তাই মহান আল্লাহ পাক সমগ্র সৃষ্টি জগৎকে মানুষের সেবায় নিয়োজিত করে রেখেছেন, পবিত্র কোরআনেই রয়েছে এর ঘোষণা :
هُوَ الَّذِي خَلَقَ لَكُمْ مَا فِي الْأَرْضِ جَمِيعًا-
তিনিই সেই আল্লাহ পাক, যিনি তোমাদের উপকারার্থে সৃষ্টি করেছেন পৃথিবীর সব কিছু।   (আল-বাক্বারা ২৯)
 আল্লাহ পাক মানুষের রিযিকের যাবতীয় ব্যবস্থা জমীনের অভ্যন্তরে রেখে দিয়েছেন। যে যখনই যথা নিয়মে জমীনের উপর মেহনত করে, আল্লাহ পাক তার কাম্য বস্তু দান করেন, আর এ উদ্দেশ্যে আল্লাহ পাক বন্দার জন্যে আসমান থেকে বারি বর্ষণ করেন, চন্দ্র-সুর্য দ্বারা আলো বিতরণ করেন,বীজ থেকে অঙ্কুেরাদগম করেন, ক্রমে ক্রমে তা হতে নানান জাতের শষ্য ও ফলমূলের ব্যাপক সমারহ করেন। তাই বান্দার কর্তব্য হলো, আল্লাহ পাকের অনন্ত-অসীম নেয়ামত ভোগ করে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা এবং তাঁর বন্দেগী করা। এপর্যায়ে প্রথম কর্তব্য হলো আল্লাহ পাকের তৌহীদ বা একত্ববাদে বিশ্বাস স্থাপন করা, শিরক বর্জন করা এবং আল্লাহ পাকের যাবতীয় বিধি-নিষেধ পালন করা। এখানে একথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে , আল্লাহ পাকের বন্দেগী শুধু কয়েকটি নিদিষ্ট এবাদতের মধ্যেই সীমিত নয়; বরং জীবনের সকল ক্ষেত্রে মানুষের যাবতীয় কর্মকান্ড যথা পানাহার, আয়-রোজগার, বিয়ে-শাদী এক কথায় সব কিছু হতে হবে আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে এবং তাঁর পছন্দনীয় তরীকায়। আল্লাহ পাক কোরআনে কারীমে এসত্যটিকে এভাবে ঘোষণা করেছেন:
قُلْ إنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
(হে রসূল!) আপনি ঘোষনা করুন, নিশ্চয় আমার নামাজ, আমার কোরবানী এবং আমার জীবন ও মরণ বিশ্ব-প্রতিপালক আল্লাহই জন্যে।
মরমী কবি তাই বলেছেন
نوشيدنش تابع حق را ديدنش نا ديدنش দ্ধ خوردنش خوابيدنش
বান্দার দেখা না দেখা সব কিছুর মধ্যেই থাকতে হবে আল্লাহ পাকের তাবেদারী,তার পানাহারে মাঝে এমনকি নিদ্রগমনেও।
قرب حق از هرعمل مقصود دار দ্ধ  تازتوگردد جلالش آشكار
প্রত্যেকটি কাজের উদ্দেশ্য হতে হবে আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি লাভ,আর শুধু এভাবেই তোমার দ্বারা আল্লাহ পাকের কুদরতের বহিঃপ্রকাশ ঘটবে। এক কথায় মানুষের দুনিয়াবী জীবনে একমাত্র লক্ষ্য হবে আল্লাহ পাকের এবাদত। আর যাবতীয় এবাদতের মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ এবাদত হল নামাজ। আমরা জানি যে ইসলাম ধর্ম পাঁচটি ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। নামাজ তার মধ্যে অন্যতম এবং এবাদতের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। তাই পবিত্র কুরআনে ৮২ জায়গায় নামাজ কায়েম করার জন্য সুস্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে। ইসলামে সালাতের গুরুত্ব যেমন অপরিসীম তেমনি আল্লাহ পাকের রহমত এবং ইহ-পরোকালের মুক্তিলাভের প্রধান প্রধান অবলম্বন হিসাবে নামাজ বিশেষ তাৎপর্যবহ।
নামজের  গুরুত্ব ও তাৎপর্য   
নামাজের মাধ্যমে একজন মানুষ আল্লাহ পাকের সাথে দেয়া প্রতিশ্রুতির বার বার প্রতিফলন ঘটায়। সে তার প্রভু বা ¯্রষ্টাকে বুঝাতে সক্ষম হয় যে, সে তার প্রতিশ্রুতি পালন করে যাচ্ছে। এ নামাজের মাধ্যমেই মানুষ আল্লাহ পাকের নৈকট্য লাভ করে। স্বর্গীয় প্রেমের ভুবনে নামাজ হল অতুলনীয়। এর মাধ্যমে সরাসরি ভাবে আল্লাহ পাকের সাথে বান্দার সম্পর্ক স্থাপন হয়। যেমন হাদীস শরীফে রসূলুল্লাহ স. বলেন যে, আল্লাহ পাক ঘোষণা করেন:“ আমি নামাজ কে আমার এবং আমার বান্দার মাঝে অর্ধ অর্ধ করে ভাগ করেছি এবং আমার বান্দা আমার কাছে যা চায় তা আমি তাকে দিয়ে থাকি। যখন বান্দা বলে الحمد لله رب العالمين ,তখন আল্লাহ পাক বলেন: আমার বান্দা আমার প্রশংসা করলো। বান্দা যখন বলে,  الرحمن الرحيمতখন আল্লাহ বলেন: আমার বান্দা আমার গুণাগুণ বর্ণনা করলো
। বান্দা যখন বলে, مالك يوم الدين তখন আল্লাহ পাক বলেন: আমার বান্দা আমার মহাত্ম্য বর্ণনা করলো। কোন কোন বর্ণনায় আছে যে আল্লাহ পাক উত্তরে বলেন:  فوض الي عبدي অর্থাৎ, বান্দা আমার উপর (সবকিছু)সমর্পণ করলো।অতঃপর, যখন বান্দা বলে,
  إياك نعبد وإياك نستعين তখন আল্লাহ পাক বলেন: এটা আমার এবং আমার বান্দার মধ্যেকার কথা, এবং আমার বান্দা আমার কাছে যা চাইবে আমি তাকে তাই দেবো। অতঃপর বান্দা যখন শেষ পর্যন্ত পড়ে, শুগ্ম প্রশস্ত
 اهدنا الصراط المستقيم صراط الذين أنعمت عليهم غير المغضوب عليهم ولا الضالين
তখন আল্লাহ পাক বলেন: এসব আমার বান্দার জন্য এবং সে যা চায় তা সবই তার জন্য।
এজন্য মানুষের আভ্যন্তরীণ পরিবর্তনে নামাজ হল মূল চালিকা শক্তি। এজন্য নামাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আল্লাহ পাকের সাথে মানুষের সম্পর্কের বন্ধন সুদৃঢ় ও মজবুত হয়। ইহকাল ও পরকালের মুক্তির পথ হয় সুগম ও সুপ্রশস্ত। সালাত ব্যক্তি, পরিবার, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে শান্তি, শৃঙ্খলা, ভ্রাতৃত্ব ও মমতাবোধ উজ্জীবিত করে- গড়ে উঠে সামাজিক ঐক্য। নামাজ এমন এক এবাদত যার দ্বারা দিনে পাঁচ বার আল্লাহ পাকের সাথে বান্দার সম্পর্ক তৈরী হয়। মেরাজের রজনীতে আল্লাহ পাক নামাজ ফরজ করেন। প্রথমে পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয়, তার পর আল্লাহ পাক মানুষের প্রতি দয়া করে পাঁচ ওয়াক্তে নিয়ে আসেন। তবে আজর ও সওয়াব পঞ্চাশ ওয়াক্তের-ই চালু রাখেন। সুতরাং নামাজী বাক্তি বাহ্যিক ভাবে পাঁচ ওয়াক্ত পড়লেও প্রকৃত পক্ষে আল্লাহ পাক তাকে পঞ্চাশ ওয়াক্তেরই সওয়াব প্রদান করেন। নামাজ এমন এক এবাদত যা আল্লাহ পাক সাত আসমানের উপরেই ফরজ করাকে শ্রেয় মনে করেছেন।
মেরাজের রজনীতে আল্লাহ পাক কোন প্রকার মাধ্যম ছাড়াই নামাজের হুকুম প্রদান করেন। এতে সালাতের অপরিসীম গুরুত্ব ও ফজীরলতেরই প্রতিফলন ঘটেছে। আল্লাহ পাকের একত্ববাদ ও রেসালাতের প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের পর গুরুত্বপূর্ণ রুকন হচ্ছে নামাজ। হাদীস শরীফে আল্লার নবী বলেন:
بني الإسلام على خمس، شهادة أن لا إله إلا الله، وأن محمداً رسول الله، وإقام الصلاة، وإيتاء الزكاة، و صوم رمضان، وحج البيت. رواه البخاري  و مسلم
অর্থাৎ, ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি : ১- এ কথার সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন সত্যিকার ইলাহ নেই এবং মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ পাকের রাসূল। ২-নামাজ কায়েম করা। ৩-জাকাত প্রদান করা। ৪-রমজানের রোজা রাখা। ৫-বাইতুল্লাহর হজ্ব করা। (বোখারি ও  মুসলিম )
 রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন -
رأس الأمر الإسلام، وعموده الصلاة، و ذروة سنامه الجهاد.رواه الترمذي
অর্থাৎ,সবকিছুর মূল হল ইসলাম, আর ইসলামের খুঁটি নামাজ, আর ইসলামের শীর্ষ পীঠ হল জিহাদ। (তিরমিযি শরীফ)
নামাজ হচ্ছে আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় ও সর্বোত্তম আমল। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ
استقيموا ولن تحصوا، واعلموا أن خير أعمالكم الصلاة، ولن يحافظ على الوضوء إلا مؤمن. رواه ابن ماجة
তোমরা অটুট ও অবিচল থাক, গণনা করো না, আর মনে রাখবে তোমাদের সর্বোত্তম আমল হল নামাজ, একজন মোমিন অবশ্যই সর্বদা ওজু সংরক্ষণ করতে থাকে। (ইবনে মাজাহ)
নামাজ হল নূর- রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন :
الطهور شطر الإيمان، والحمد لله تملأ الميزان، وسبحان الله والحمد لله تملان أو تملأ ما بين السماء والأرض، والصلاة نور، والصدقة برهان، والصبر ضياء، والقرآن حجة لك أو عليك. رواه مسلم
অর্থাৎ,পবিত্রতা ঈমানের অর্ধেক আর আলহামদুলিল্লাহ মিযানের পাল্লাকে সম্পূর্ণ করে, সুবহানাল্লাহ ও আলহামদুলিল্লাহ আসমান ও জমিনের মধ্যবর্তী স্থানকে নেকির দ্বারা পূর্ণ করে। সালাত নূর বা আলো। দান খয়রাত ক্বিয়ামতের দিন মুমিনের দলীল হিসাবে প্রকাশ পাবে, ধৈর্য প্রকাশ পাবে উজ্জলতা হিসাবে আর কোরআন হাজির হবে বান্দার পক্ষে বা বিপক্ষে সাক্ষ্যদাতা  হিসাবে । (মুসলিম)
নামাজ হল আল্লাহ পাকের  নৈকট্য ও উচ্চ-মর্যাদা লাভের একমাত্র উপকরণ। হযরত সাওবান (রা:) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এমন আমল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন যা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তরে বললেন, তুমি বেশি করে আল্লাহ পাকের জন্য সেজদা(নামাজ) আদায় করতে থাক, কারণ তোমার প্রতিটি সেজদার কারণে আল্লাহ পাক তোমার মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন এবং তোমার গুনাহ মাপ করবেন। (মুসলিম )
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন :
أقرب ما يكون العبد من ربه وهو ساجد، فأكثروا الدعاء. رواه مسلم
বান্দা আল্লাহ পাকের সবচেয়ে নিকটবর্তী হয় ঐ সময়ে যখন সে সেজদারত থাকে। সুতরাং তোমরা সেজদার অবস্থায় বেশি বেশি প্রার্থনা কর। (মুসলিম)
ক্বিয়ামতের দিন সর্ব প্রথম বান্দার নামাজের  হিসাব নেয়া হবে। তাতে হয় সে মুক্তি পাবে অথবা ধ্বংস হবে। জনাব রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
أول ما يحاسب به العبد يوم القيامة الصلاة، فإن صلحت صلح سائرعمله، وإن فسدت فسد سائر عمله. رواه الترمذي
কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম বান্দার নামাজের হিসাব হবে। যদি নামাজ ঠিক হয় তবে তার সকল আমল সঠিক বিবেচিত হবে। আর যদি নামাজ বিনষ্ট হয় তবে তার সকল আমলই বিনষ্ট বিবেচিত হবে। (তিরমিযি)
যাদের নামাজ ঠিক হয়ে যায় তাদের অন্যান্য সমস্ত এবাদত ও কর্মও ঠিক হয়েযায়।
হযরত উমার (র.) খলীফাতুল মুসলিমীন হওয়ার পর তার গভর্নরদের প্রতি একটি নির্দেশ নামা পঠিয়েছিলেন তাতে লেখা ছিল “আমার নিকট তোমাদের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে নামাজ। বিধায় যারা নিজ নামাজের ক্ষেত্রে নিষ্ঠাবান ও যতœবান হবে তারা দ্বীন-ধর্মের  হেফাজতকারী বলে গণ্যহবে। আর যারা নিজেদের নামাজ নষ্ট করবে, তারা তদের আন্যান্য সৎকর্মকে সর্বাধিক বিনষ্টকারী বলে গণ্য হবে।”
 রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন
 رواه أحمد. العهد الذي بيننا وبينهم الصلاة، فمن تركها فقد كفر
আর্থাৎ, আমাদের ও তাদের (মুনাফেকদের) মধ্যে যে অঙ্গীকার রয়েছে তা হচ্ছে নামাজ আদায় করা, সুতরাং যে নামাজ ত্যাগ করবে সে (প্রকাশ্যে) কাফের হয়ে যাবে।
ব্যাখ্যা: রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন। আমরা যে মুনাফেকদের জান-মালের নিরাপত্তা দিয়েছি তা এই জন্য যে, তারা আমাদের ন্যায় নামাজ পড়বে ও জামাতে আসবে। অন্যথায় তাদের ঈমানকে তো আমরা দেখিনা। বিধায় যারা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ এবাদত নামাজ ত্যাগ করলো তারা তাদের কুফুরীকে প্রকাশ করে দিল। এজন্য প্রতিটি মুসলমানের এ ব্যপারে সতর্ক হওয়া দরকার যে, তারা যেন নামাজ ত্যাগের মাধ্যমে নিজেদের কুফুরিকে প্রকাশ না করে।
অন্য বর্ণনায় এসেছে- নামাজ ত্যাগের দ্বারা বান্দা ও কুফুরের মধ্যেকার প্রাচীর ভেঙ্গে যায়। ব্যাখ্যা ঃ মুমিন ও কুফুরীর মধ্যে নামাজ হল প্রাচীরের ন্যায়, এ প্রাচীরের (নামাজের) কারণে বান্দা কুফুরীর সীমানায় প্রবেশ করতে পারেনা। আর যখন নামাজ ত্যাগ করে তখন তার এ প্রাচীর ভেঙ্গে যায়, তখন সে কুফুরীর সীমানায় ডুকে যায়, বিধায় নামাজ ত্যাগের দ্বারা সে কুফুরী পর্যন্ত পৌছে যায়।

নামাজের ফায়দা ও উপকারিতা

নামাজ হল মুমিনের পাপ মোচনকারী এবং ছোট ছোট গুনাহের প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন :
الصلوات الخمس والجمعة إلى الجمعة كفارات لما بينهن. رواه مسلم
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এবং এক জুমা হতে আরেক জুমা উভয়ই তার  মধ্যবর্তী গুনাহ সমূহের জন্য কাফ্ফারা স্বরুপ , যতক্ষণ পর্যন্ত নামাজী ব্যক্তি কবিরা গুনাহে লিপ্ত না হয়। (মুসলিম) 
এবং রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাজের দ্বারা পাপমোচনের একটি উদাহরণ এভাবে প্রদান করেছেন :
أرأيتم لوأن نهراً بباب أحدكم، يغتسل فيه كل يوم خمس مرات، هل يبقى من درنه شيء ؟ قالوا لا يبقى من درنه شيء، قال فكذلك مثل الصلوات الخمس، يمحو الله بهن الخطايا. رواه مسلم
যদি তোমাদের কারো বাড়ির দরজায় একটি নদী থাকে আর তাতে সে দৈনিক পাঁচবার গোসল করে, তাহলে তার শরীরে কি কোন ময়লা আবর্জনা অবশিষ্ট থাকে? সাহাবিরা উত্তরে বললেন, না। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের দৃষ্টান্ত এমনি। দিনে পাঁচবার নামাজ  আদায় করার দ্বারা আল্লাহ পাক বান্দার গুনাহ গুলিকে ধুয়ে মুছে ফেলেন। (মুসলিম)

জনাব রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো একটি দৃষ্টান্ত দিয়েছেন:
إن العبد المسلم ليصلي الصلاة يريد بها وجه الله، فتهافت عنه ذنوبه، كما يتهافت هذا الورق عن هذه الشجرة. رواه أحمد
অর্থাৎ,মুসলিম বান্দা যখন একমাত্র আল্লাহ পাকের  সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে নামাজ আদায় করে তখন তার গুনাহ এমনভাবে ঝরে পড়তে থাকে যেমন এই বৃক্ষের পাতা ঝরে পড়ে। (আহমদ )

পরিবারবর্গ ও সম্পর্কশীলদের নামাজের আদেশ ও তার রহস্যঃ
وَأْمُرْ أَهْلَكَ بِالصَّلَاةِ وَاصْطَبِرْ عَلَيْهَا لَا نَسْأَلُكَ رِزْقاً نَّحْنُ نَرْزُقُكَ وَالْعَاقِبَةُ لِلتَّقْوَى (ত্বোয়া-হা
;১৩৩) অর্থাৎ, আপনি পরিবারবর্গকে নামাজের আদেশ দিন  এবং নিজেও এর উপর অবিচল থাকুন। বাহ্যতঃ এখানে আলাদা আলাদা দুটি নির্দেশ রয়েছে। (ক) পরিবারবর্গকে নামাজের আদেশ এবং(খ) নিজেও নামাজ অব্যাহত রাখা । কিন্তু চিন্তা করলে দেখা যায় যে, নিজের নামাজ পুরোপুরি অব্যাহত রাখার জন্যেও আপনার পরিবেশ, পরিবারবর্গ ও স্বজনদের নিয়মিত হওয়া আবশ্যক। কেননা পরিবেশ ভিন্নরূপ হলে মানুষ স্বভাবত নিজেও অলসতার শিকার হয়ে যায়।স্ত্রী, সন্তান-সন্ততি ও সম্পর্কীয় সবাই ‘আহলের’ অন্তর্ভুক্ত। এদের দ্বারা মানুষের পরিবেশ ও সমাজ গঠিত হয়। এ আয়াত অবতীর্ণ হলে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যহ ফজরের নামাজের সময় হযরত আলী ও ফতেমা (রাঃ)-এর গৃহে গমন করে  الصَّلَاةَ الصَّلَاةَ (নামাজ পড়, নামাজ পড়)বলতেন। মাআরেফুল কোরআন । ধনকুবের ও রাজারাজড়াদের ধনৈশ্বর্য ও জাঁকজমকের উপর যখনই  হযরত ওরওয়া ইবনে যোবায়েরের দৃষ্টি পড়ত , তখনই তিনি নিজ গৃহে ফিরে আসতেন এবং পরিবারবর্গকে নামাজ পড়ার কথা বলতেন।অতঃপর আলোচ্য আয়াত পাঠ করে শোনতেন। হযরত ওমর ফারুক (রাঃ) যখন রাত্রিকালে তাহাজ্জুদের জন্য জাগ্রত হতেন, তখন পরিবারবর্গকেও জাগ্রত করে দিতেন।এবং এই আয়াত পাঠ করে শোনাতেন। 
যে ব্যক্তি নামাজ ও এবাদতে আত্মনিয়োগ করে , আল্লাহ পাক তার রিযিকের ব্যপার সহজ করে দেন।
لَا نَسْأَلُكَ رِزْقاً - অর্থাৎ, আমি আপনার কাছে এই দাবী করি না যে, আপনি নিজের ও পরিবারবর্গের রিযিক নিজস্ব জ্ঞান-গরিমা ও কর্মের জোরে সৃষ্টি করুন। বরং এ কাজটি আমি আমার নিজের দায়িত্ব রেখেছি।কেননা, রিযিক উপার্জন করা প্রকৃতপক্ষে মানুষের সাধ্যাতীত ব্যাপার। সে বেশীর মধ্যে মাটিকে নরম ও চাষোপযোগী করতে পারে এবং তাতে বীজ নিক্ষেপ করতে পারে।, কিন্তু বিজের ভেরত থেকে অঙ্কুর উৎপন্ন করা এবং তাকে ফলে-ফুলে সুশোভিত করার মধ্যে মানুষের কোন হাত নেই। এটা সরাসরি আল্লাহ পাকের কাম।বৃক্ষ গজানোর পরও মানুষের সকল প্রচেষ্টা তার হেফাজত ও আল্লাহ কর্তিক সৃজিত ফল-ফুল দ্বারা উপকৃত হওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। যে ব্যক্তি আল্লাহ পাকের এবাদতে মশগুল হয়ে যায়, আল্লাহ পাক এই পরিশ্রমের বোঝাও তার জন্য সহজ ও হালকা করে দেন।  
নামাজের ফায়দা ও উপকারিতা সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক নিজ ভাষায় এভাবে  ঘোষণা দেন,
وَأَقِمِ الصَّلَاةَ إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَر. العنكبوت
নিশ্চয় নামাজ (নামাজীকে) অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে। আল-আনকাবুত; ৪৬
নামাজ,মানন সংশোধনের পূর্ণ ব্যবস্থাপত্র
অন্যায় ও অপরাধ দমনের অভিনব পদ্ধতি অবিস্কার হয়ে আসছে যুগযুগ ধরে।যখনই যেখানে দুষ্কৃতকারীরা অন্যায় ও অপরাধে লিপ্ত হয়েছে তখনই তাদের দমন করার জন্য কালের কর্ণধারেরা প্রণয়ন করে ছিলো নতুন নতুন ধারার আইন। আবশ্য তাদের এ প্রচেষ্টার ফল তারা সাময়িক ভাবে পেয়ে ছিলো কিন্তু স্থায়ী ভাবে এ সমস্যসার সমাধান তারা খুঁজে পায়নি এবং কস্মিনকালেও তা সম্ভব না, ইতিহাস তার জলন্ত প্রমাণ। বর্তামান বিশ্বের প্রতিটি রাষ্ট্রে নিরলস ভাবে এ প্রচেষ্টাই চালানো হচ্ছে যে, রাষ্ট্রে কি করে শান্তি,শৃঙ্খলা ফিরে আসবে এবং অন্যায় অপরাধ দূর হবে। কিন হচ্ছে তার উল্টটা مرض بڑھتا گیا جوں جوں دواکا নতুন নতুন ঔষধ যেমন আস্কিার হচ্ছে তেমনি রোগ ও বেড়েই চলেছে।বর্তমানে অন্যায় ও অপরাধ দমনে দেশী ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গ্রহণ করা হচ্ছে নানা ব্যবস্থা কিন্তু তাদের এ চেষ্টা ফল প্রসূ হচ্ছেনা। আধুনিক বিজ্ঞান তার সর্বশেষ প্রচেষ্টা ব্যয় করছে এর পিছে এবং অন্যায় ও অপরাধ দমনে উপহার দিয়েছে বিশ্ব বাসীকে অত্যাধুনিক যন্ত্র সাথে সাথে গড়ে উঠেছে দেশে দেশে দক্ষ বাহিনী কিন্তু কই! অন্যায় ও অপরাধ কি আদৌ দমন হচ্ছে? উত্তরোত্তর তো বেড়েই চলেছে । ব্যর্থতা ছাড়া সফলতার ছায়াও তার পর্স্প করতে পারেনি।এ অবস্থা অবলকন করার জন্য বিশ্বের প্রতিটি রাষ্ট্রের প্রতি একটু নজর বুলান। পক্ষান্তরে মানব ও মানবতার এ জটিল সমাস্যার স্থায়ী সমাধান দিয়েছে আল-কোরআন এরশাদ হচ্ছে 
وَأَقِمِ الصَّلَاةَ إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَر. العنكبوت
নিশ্চয় নামাজ (নামাজীকে) অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে। আল-আনকাবুত; ৪৬
আয়াতে ব্যবহৃত الْفَحْشَاء   শব্দের অর্থ এমন সুস্পষ্ট মন্দ কাজ যাকে মোমেন ও কাফের বির্বিশেষে প্রত্যেক বুদ্ধিমান ব্যক্তিই মন্দ মনে করে; যেনম ব্যভিচার,অন্যায়, হত্যা,চুরি ডাকাতি ইত্যাদি।পক্ষান্তরে الْمُنْكَر এমন কাজকে বলা হয়, যার হারাম ও অবৈধ হওয়ার ব্যপারে শরীয়ত বিশারদগণ একমত। এক কথায় الْفَحْشَاء   ও الْمُنْكَر শব্দদ্বয়ের মধ্যে যাবতীয় অপরাধ  এবং প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য গোনাহ দাখিল হয়ে গেছে। যেগুলো  নিঃসন্দেহরূপে  সৎকর্মের পথে সর্ববৃহৎ বাধা। গভীর ভাবে লক্ষ করলে আমরা বুঝতে পারবো যে মানব রচিত বিধান দ্বারা শুধু সাময়ীক প্রকাশ্যে যে সমস্ত অন্যায় ও অপরাধ সংঘটিত হয় তা দমন করা সম্ভব কিন্তু অপ্রকাশ্যে এবং রাতের অন্ধকারে যে সমস্ত অপরাধ সংঘটিত হয় তা কোন বাহিনী বা মানব রচিত বিধান দ্বারা দমন করা কস্মিনকালেও সম্ভব নয়। তবে হাঁ যে সমস্ত অপরাধ মানষের অগচরে-গুপনে,রাতের অন্ধকারে যার কোন খবর পৃথিবীর কেউ রাখতে পারেনা এমন অপরাধ দমনের গ্যারান্টি দিচ্ছে একমাত্র নামাজ। কারণ নামাজে দন্ডয়মান হওয়ার কারণে মানব মনে আল্লাহ পাকের শ্রেষ্ঠত্ব ও মহাত্মের যে উপলদ্ধি আসে তা অন্যায় অশ্লীল কাজ থেকে মানুষকে অবশ্যই বিরত রাখে। তত্ত্বজ্ঞানীগণ বলেছেন, নামাজের কারণে মানব মনে আল্লাহ পাকরে ভয়ের উদ্রেক হয় আর তা মানুষকে পাপাচার থেকে বিরত থাকতে সাহায্য করে। যে ব্যক্তি আল্লাহ পাকের মহান দরবারে নামাজের মাধ্যমে হাযির হয়, নিজের দীনতা-হীনতা স্বীকার করে এবং বিনয় প্রকাশ করে, জীবনের কৃত অন্যায়ের জন্যে ক্ষমা প্রার্থী  হয়  এবং আল্লাহ পাকের আযাবের ভয়ে ভীত –সন্ত্রস্ত  হয়, তার পক্ষে নামাজের পর পুনরায়  পাপাচারে লিপ্ত হওয়া কি করে সম্ভব হতে পারে! নামাজী ব্যাক্তি যখন দরবারে এলাহীতে হাযির হয়, তার প্রত্যেকটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আল্লাহ পাকের অনুগত্য প্রকাশ করে, তার অন্তর সর্বশক্তিমান আল্লাহ পাকের ভয়ে কম্পমান থাকে, সে প্রথমে দন্ডয়মান অবস্থায়, পরে রুকু অবস্থায়,অবশেষে সেজদারত হয়ে আল্লাহ পাকের দরবারে মিনতি প্রকাশ করে, এরপর তার পক্ষে অন্যায়-অশ্লীল কাজে লিপ্ত হওয়া সম্পূর্ণ অকল্পনীয়। এখানে একটা কথা  বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য যে, নামাজ রুকু ,সেজদা ,আরকান আহকাম যথা নিয়মে হতে হবে। আল্লামা বগভী রহ. হযরত আনাস র. বর্ণিত হাদীসের উদ্ধৃতি দিয়ে ছেন।তিনি বর্ণনা করেছেন, একজন আনছারী যুবক হযরত রসূলে করীম স. সঙ্গে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতেন।কিন্তু এতদসত্ত্বেও সে বিভিন্ন প্রকার পাপাচারে লিপ্ত  হতো তার এ অবস্থা সর্ম্পে প্রিয়নবী স. কে অবহিত করা হয়। তখন তিনি এরশাদ করেন, তার নামাজ তাকে একদিন এসব গুনাহ থেকে বিরত করবে। কিছুদিন পর তাই হলো । সে তওবা করে ফেললো এবং তার অবস্থ ঠিক হয়ে গেল। আধুনিক ব্যাখ্যাকারগণ এর একটি দৃষ্টান্ত দিয়েছেন। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বসন্ত-কলেরার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার লক্ষে  যেভাবে টীকা বা ইনজেকশন দিয়ে থাকেন এবং তার দ্বারা উপকারও হয়, ঠিক তেমনি অন্যায়-অশ্লীলতা এক কথায় পাপের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যে নামাজ প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।যেভাবে যথা নিয়মে নামাজ ঔষধ সেবন, ইনজেকশন গ্রহণ রোগ নিরাময়ের জন্য বা রোগ আক্রমণ থেকে আত্মরক্ষার জন্যে জরুরী মনে করা হয়,  ঠিক তেমনি যথা নিয়মে নামাজ আদায়ের মাধ্যমেও মানব মন পাপাচার থেকে পবিত্রতা অর্জন করতে পারে। নামাজে আন্তরিকতা, মনের একাগ্রতা ,আল্লাহ পাকের ভয়, তাঁর রহমতের আশা, আল্লাহ পাকের শ্রেষ্ঠত্বের উপলদ্ধি যত অধিক পরিমাণে হবে , নামাজ তত বেশী পাপাচার থেকে বিরত রাখতে সফল হবে। একজন নামাজী ব্যক্তি নামাজের যাবতীয় কল্যান ওই সময় পাবে যখন সে “اقامت صلوٰة  ”করবে। কোরআন কারীমে যতবার নামাজের তাগীদ দেওয়া হয়েছে সাধারণত “اقامت صلوٰة ” শব্দের মাধ্যমেই দেওয়া হয়েছে। নামাজ পড়ার কথা শুধু দু’এক জায়গায় বলাহয়েছে।এজন্য “ اقامت صلوٰة ”( নামাজ প্রতিষ্ঠা)-এর মর্ম অনুধাবন করা উচিত । اقامت-এর শাব্দিক অর্থ সোজাকরা, স্থায়ী রাখা। সাধারণত যেসব খুঁটি দেওয়াল বা গাছ প্রভৃতির আশ্রয়ে সোজাভাবে দাঁড়ানো থাকে , সে গুলো স্থায়ী থাকে এবং পড়ে যাওয়ার আশংকা কম থাকে। এজন্য স্থায়ী ও স্থিতিশীলকরণ অর্থেও ব্যবহার হয়।কোরআন সুন্নাহ্র পরিভাষায় “اقامت صلوٰة ” অর্থ নির্ধারিত সময় অনুসারে যাবতীয় শর্ত ও নিয়ম রক্ষা করে নামাজ আদায় করা। শুধু নামাজ পড়াকে “اقامت صلوٰة ”  বলা হয়না। নামাজের যত গুণাবলী , ফলাফল , লাভ ও বরকতের কথা কোরআন হাদীসে বর্ণনা করা হয়েছে তা সবই “اقامت صلوٰة  ” ( নামাজ প্রতিষ্ঠা)-এর সাথে সম্পর্কযুক্ত। এ জন্য প্রতিটি নামাজী ব্যক্তির জন্য এই সমস্ত বিষয়ের পূর্ণ জ্ঞান রাখা দরকার যা তার নামাজ প্রতিষ্ঠা করতে লাগে, তা না হলে সে নামাজের কল্যাণ, ও বরকত হতে মাহরুম হবে। তাই এখন নামাজের গুরুত্বপূর্ণ মাসেয়েল নিয়ে আলোচনা করা হবে ইনশাআল্লাহ।
নামাজ আরম্ভ করার পুর্বে যে সমস্ত কাজ অবশ্য কর্তব্য।
১। শরীর পাক হওয়া।
২। কাপড় পাক হওয়া।
৩। নামাজের জায়গা পাক হওয়া।
৪। ছতর ঢাকা।
৫। ক্বেবলা মুখি হওয়া।
৬। নিয়ত করা।
৭। নামাজের ওয়াক্ত হওয়া।
নামাজের পূর্বেই নামাজীকে আবশ্যই ছোট নাপাক ও বড় নাপাক থেকে শরীর পাক করে নিতে হবে। বড় নাপকা থেকে শরীর পাক করার একমাত্র উপায় হল গুসল করা।
এবার আসুন জেনে নেই গুসল ফরজ হয় কখন।
১। খাহেসের সাথে, উত্তেজনার সাথে বীর্য ক্ষরণ হলে, বীর্য বের হলে গুসল ফরজ হয়, চাই পুরুষের হোক বা মহিলার, ঘুমন্ত অবস্থায় হোক বা জাগ্রত অবস্থায়।
 ২। সহবাসে দ্বারা চাই নিজ স্ত্রীর সাথে হোক বা অবৈধ পন্থায় হোক বীর্যর্  বের হোক অথবা না হোক।
নারীর নির্ধারীত গুসল
 ৩।যখন ঋতু¯্রাবের রক্তপাত শেষ হয়ে যাবে, তখন নারীকে নামাজ বা যে কাজ গুলির জন্য পবিত্র থাকা আবশ্যক সে গুলি আঞ্জাম দেয়ার জন্য তার গুসল করা ফরজ।
রক্তপাত ৩ দিনের কম হবেনা, অতএব যদি তিন দিনের আগে শেষ হয়ে যায়, তবে তা ঋতু¯্রাবের রক্ত নয় বরং এটা এসতেহাযার রক্ত।
এবং দশ দিনের বেশিও থাকবেনা, অতএব যদি দশ দিনের বেশি থাকে তাহলে দশ দিনের পর থেকে সে গুলো এসতেহাযার রক্ত বলে গণ্য হবে। 
  
গ) - রক্তপাত দশ দনিরে বশেি থাকবে না, অতএব যদি দশ দনিরে বশেি থাকে তাহলে দশ দনি পর থকেে ঋতুস্রাবরে রক্ত নয় বরং তা এসতহোযার রক্ত বলে পরগিণতি হব।নামাজ আরম্ভ করবিার র্পূবে যে সমস্ত কাজ অবশ্য র্কতব্য, তাহাকে নামাযরে র্শত বলে । ইহা আটট;ি যথা :-
১) শরীর পাক-পবত্রি করয়িা লওয়া, র্অথাৎ অযু কংিবা গোসলরে প্রয়োজন হইলে তাহা আদায় করয়িা লইতে হইবে ।
২) পোষাক পাক হওয়া । যদি কাপড়ে কোন নাপাক বস্তু নাগয়িা থাকে তাহা ধুইয়া পাক করয়িা লইবে অথবা উহা পরর্বিতন করয়িা পাক-পবত্রি কাপড় পরধিান করয়িা লইতে হইবে ।
৩) স্থান পাক হওয়া -র্অথাৎ যে স্থানে দাঁড়াইয়া নামায পড়বি,ে তাহা পাবত্রি হওয়া ।
৪) ছতর ঢাকয়িা লওয়া – র্অথাৎ নামায পড়বিার সময়ে পুরুষরে নাভী হইতে ও স্ত্রীলোক হইলে মুখ, হাতরে কব্জা ও পায়রে তলা ব্যতীত সমুদয় শরীর ঢাকয়িা লওয়া কন্তিু বাদী হইলে পটে, পঠি, র্পাশ্ব ও নাভী হইতে জানুর নীচ পযন্ত কাপড় দ্বারা ঢাকয়িা লওয়া ফরয ।
৫) কাবা শরীফরে দকি মুখ করয়িা দাঁড়ান ।
৬) নর্দিষ্টি ওয়াক্তে নামাজ আদায় করা । নয়িত করা-যে ওয়াক্তরে নামায পড়বি,ে তাহার নয়িত করা ।
৭) তাকবীরে তাহরীমা বলা । র্অথৎ নামাজরে নয়িত করয়িা “আল্লাহু আকবার” বলয়িা নামায আরম্ভ করা।
নামাযরে রোকনসমূহ


      

























খ) - রক্তপাত ৩ দনিরে কম হবে না, অতএব যদি তনি দনিরে আগে শষে হয়ে যায়, তবে তা ঋতুস্রাবরে রক্ত নয়।

Tuesday, May 9, 2017

تذکرۃ النحو




تذکرۃ النحو
المرّتب
عبد الاحد
احد من اساتذۃ المدرسۃ القومیۃ مدینۃ العلوم
شاھزادفور۔ سراجغنج








مقدمہ
الحمد للہ رب العالمین والصلوٰۃ والصلام علی سید الانبیاء و المرسلین وعلی اٰلہ واصحابہ اجمعین ومن تبعہم باحسان الی یوم الدین اما بعد،
  اللہ سبحانہ وتعالیٰ نے اپنے کلام کو نازل فرماتے وقت کلام عرب کو اختیار فرمایاہے۔اور دین کی اصل تو کلام اللہ ہی ہے اور اسی کی تعلیم کیلئے  اپنے برگزیدہ بندہ   محبوب دوعالم  جناب محمد ﷺ کو بھیجا  اور آقانے اسی زبان میں  اس کی تشریح فرمائی۔
 کلام کاخلاصہ یہ ہے کہ ، کلام اللہ  اور کلام رسول اللہ ﷺ چونکہ عربی زبان میں ہے اور علوم عربیہ کی تعلیم و تعلم کا  واحد آلہ علم نحو ہے، اسلئے غیر عربی داں کیلئے اسکا افہام و تفہیم بدون علم نحو سیکھنے  کے کوئی چارہ  نہیں ہے۔
 اسلئے اس علم کو علمائے کرام نے  ہر ہر زمانے میں اپنے اپنے  انداز پیش کیا تاکہ اس کے ذریعہ  قراٰن
 اور حدیث شریف کی تعلیم و تعلم –افہام اور تفہیم عام اور سہل ہو۔
 اسی مقصد کو مد نظر  رکھ کر بندہ نے علم نحو کی مطول کتاب سے کچھ ضوابط کا تذکرہ کیا جس کا نا م بندہ نے
" تذکرۃ النحو" کر کے رکھا۔
 اگر مبتدی طلبہ اسکو اپنے سامنے رکھے تو امید ہے کہ  یہ کتاب اسکے لیئے مفید ثابت ہوگی  انشاء اللہ  العزیز۔
آخر بارگاہ  تعالٰی میں یہ التجا ہے کہ  اسکو اپنے رحم اور کرم سے قبول فرمائے ۔ اٰمین ثم اٰمین










علمائے کرام کی ارا
رائے گرامی از
 فاضل دوراں محقق زماں حضرت علامہ انور حسین صاحب
رئیس وشیخ الحدیث بجامعہ اسلامیہ عزیزیہ  فاطمۃ الزہراء  تحفیظ القرآن ودار الایتام
نحمدہ ونصلی  علی رسولہ  الکریم و بعد: نحومیر درس نظامی کی ایک  مشہور اور بالکل ابتدائی کتاب ہے۔ جس کے حل کیلئے آج تک  بہت شروحات لکھی گئیں۔ کیونکہ نحومیر ایسی ایک کتاب کہ اگر طلبہ اسے سمجھ کر پڑھے تو علم نحو کی اعلی کتابیں   اسکو آسان ہوجائیگی۔اگر نحو میر میں خامی رہے  تو اوپر والی کتاب  اس کو مشکل معلوم ہوگی استعداد ناقص ہوگا اسلئے نحومیر اچھی طرح  حل کرنا   بہت ضروری ہے
پیش  نظر کتاب  "تذکرۃ النحو"مؤلف عزیزم مولانا عبد الاحد ناٹوری   پر   بالاستیعاب ایک  طائرانہ نظر ڈالنےکا  اتفاق ہوا۔موصوف نے اس کتاب میں  بہت جا فشانی کی۔ طرز  بیان ما شاء اللہ بہت اچھا معلوم ہوا۔ میر ے خیال میں مؤلف  کی یہ  محنت قابل تحسین  و قابل قدر ہے۔
میں تہ دل سے دعا کرتاہو ں کہ رب العزت  عزیز کی محنت کو  قبول  فرمائے  مزید علمی خدمت کی  توفیق عنایت فرمائے  اور سعادت داریں سے نوازیں
محتاج دعا
انور حسین کان اللہ لہ
13-4-1435؁ھ









رائے گرامی از
  صاحب الفضیلۃ  وادیب الاریب مولانا نور الاسلام بارک اللہ فی حیاتہ
شیخ الحدیث   بالجامعۃ  الاسلامیۃ  الحسینیۃ علمابازار فینی-  بنغلادیش
الحمد لاہلہ و الصلوۃ لاہلہا اما بعد: بندہ نے مولانا عبد الاحد صاحب کی تالیف منیف  تذکرۃ النحو کے جستہ جستہ مقام پر طائرانہ نگاہ ڈالی۔
آسان اردو میں طلبہ کے سامنے مہمات نحو کو پیش کرنے کی  کوشش کی ہے۔
 انشاء اللہ تعالٰی مبتدیوں کیلئے  بہت مفید ثابت ہوگی ۔ حق تعالٰی قبول فرمائے اور مؤلف کے لئے باعث  نجات بنائے۔
کتبہ
نور الاسلام
13/7/1431؁ھ















رائے گرامی از 
صاحب الفضیلۃ   العلامۃ الحافظ یعقوب نذیر العزیزی  بارک اللہ فی حیاتہ
استاذ الحدیث و الادب بالجامعۃ الاسلامیۃ قسم العلوم (جمیل مدرسہ) بوگرا
الحمد للہ وحدہ  والصلاۃ والسلام علی من لا نبی بعدہ علی اٰلہ و صحبہ  وجمیع من بذل نشر العلوم الدینۃ جھدہ،
 اما بعد:احقر نے مولانا عبد الاحد صاحب زید مجدہ کی تازہ تریں تالیف "تذکرۃ النحو" مقامات پر جستہ جستہ نظر گھمائی۔مولاناموصوف نے  مسائل علم نحو کو طلبہ کی سہولت کیلئے  اختصاراجمع کرنے کی انتھک  محنت کی۔عبارتیں  قدرے قابل اصلاح نظر آئیں چنانچہ دو ایک جگہ ترمیم سے کام لیا ۔اللہ تعالٰی سے دعا ہے کہ موصوف کو جزا عطا فرمائے اور رسالہ کو قبول فرمائے اور مؤلف کیلئے نجات آخرت کا ذریعہ بنائے آمیں بحرمۃ سید المرسلین صلی اللہ علیہ وعلی اٰلہ و اصحابہ و اہل بیتہ اجمعین۔





















رائے گرامی از
 صاحب الفضیلۃ  العلامۃ  محمد میر خلیل الرحمٰن حفظہ اللہ تعالٰی
 رئیس  قسم اللغۃ العربیۃ وادابہا للجامعۃ الاسلامیۃ  پٹیہ چاٹگام-
بنغلا دیش
الحمد للہ رب العٰلمیں  والصلاۃ و السلام علی سید الانبیاء و المرسلیں و علی اٰلہ وصحابہ اجمعیں۔
 اما بعد:احقر اس کتاب کو یعنی مولانا عبد الاحد  صاحب کی لکھی ہوئی کتاب "تذکرۃ النحو" کو چیدہ چیدہ دیکھنے کھ موقع ملا۔الحمد للہ کتاب   میں اگر مثالیں پیش کی جائے تو میرے ختال میں بہت اچھا ہوتا۔تا ہم کتاب اپنی  نوعیت کی حیثیت سے بہت اچھی ہوئی۔مدرس اسکو  اپنے مطالعہ میں رکھکر سبق پڑھائے اور مثالیں اپنی طرف سے پیش کرے تو زیادہ مناسب ہے۔ الحمد للہ ہمارے ملک میں نحو اور صرف کا بہت محنت ہوتی ہے اور بہت کتابیں لکھی گئی ہیں۔تا ہم طلبہ میں عربی  گفتگو کی عادت نہیں پڑتی۔میرے خیال میں مثالیں زیادہ دیکر  زیادہ عربی عبارت  پڑھانے سے  عربی گفتگو میں رسائی ہوگی، ہر حال یہ کتاب اپنے موضوع پر بہت اچھی ہوئی اس کتاب سے طالبعلموں کو زیادہ سے زیادہ فائدہ  پہنچے  یہی ہماری آخری آرزو ہے۔

میر خلیل الرحمٰن
رئیس  قسم اللغۃ العربیۃ وادابہا للجامعۃ الاسلامیۃ  پٹیہ چاٹگام-
بنغلا دیش





رائے گرامی از
الداعیۃ الکبیر رئیس المناظریں العلامۃ نور الاسلام  ولیپوری حفظہ اللہ تعالٰی
خادم ،مدرسۂ  نور مدینۃ،  شائشتہ گنج، حبیب گنج۔بنگلہ دیش
تمام علوم دینۃ کی اصل ہے قرآن اور حدیث شریف، جو عربی زبان میں نازل اور  وارد ہوئیں ہیں۔اور قرآن و حدیث شریف  سیکھنا  چونکہ مسلمانون کیلئے فرض ہے۔حالانکہ یہ بغیر عربی زبان سیکھنے کے  ممکن نہیں۔ اسلئے عربی زبان سیکھنا بھی  مسلمانوں کیلئے فرض ہے۔چونکہ فرض کا موقوف علیہ  بھی فرض ہے۔ اسلئے علم صرف ، علم نحو ، علم بلاغت وغیرہ کاسیکھنا  مسلمانوں کیلئے فرض ہے اگر چہ  یہ فرض  کفایہ ہی  کیوںنہ ہو۔ اسی بنا پر ہمارے مدارس اسلامیہ میں بڑی  اہمیت کے ساتھ  قواعد عربیہ  یعنی  علم صرف ، علم نحو وغیرہ  کی تعلیم  دیجاتی ہے۔ لیکن بسااوقات طرز تعلیم کے قصور کی وجہ سے  قواعد عربیہ کا سیکھنا طلبہ کیلئے مشکل ہوجاتاہے۔اسی مشکل کو حل کرنے کیلئے  معزز مولانا  عبد الاحد صاحب بارک اللہ فی علمہ نے  یہ رسالہ"تذکرۃ النحو"کے نا م سے مرتب کیاہے۔میں نے اس کے بعض مسائل کوبغور  مطالعہ کیا، جس سے معلوم ہوتاہے کہ یہ  علم نحو کے مبتدی  طلبہ کے لئے  بہت مفید ہوگا۔ دعا کرتاہوں کہ  اس رسالہ کو اللہ تعالیٰ قبول فرمائے ۔طلبہ کیلئے علم دین سیکھنے کا  ذریعہ بنائے اور مرتب کے لئے ذریعۂ  نجات بنائے۔
محمد نور الاسلام ولیپوری
 خادم ،مدرسۂ  نور مدینۃ،  شائشتہ گنج، حبیب گنج۔بنگلہ دیش










چند باتیں
علم میں بے بضاعت کا میں معترف ہوں۔اس میں میرا سرمایہ صرف اساتذۂ کی دعا ہے۔یہ تذکرۃ  اصل میں بطور تمرین   و تدریب   کے لکھی گئی تھی   کہ طلبہ تدریب اور تمرین کے وقت اس سے کام لے۔ اس کے بعد  جب  اہل علم نے اس کو دیکھا  تو  مجھے مشورہ دیا کہ   اس میں قواعدکی امثال بھی ذکر کی جائیں  تو  بہت مفید ثا بت ہوگی۔خصوصا میرے بعض شفیق  استاذ نے مجھے  اس کا حکم فرمایا۔ اس کے بعد ان حضرات کی تعمیل حکم کی بنا پر  اس میں مثالیں پیش کی گئیں۔ تاکہ  طلبہ کے سامنے  قواعد خوب واضح اور روشن ہوجائے اور بوقت تمرین  اپنی طرف سے تمثیل زیادہ   زیادہ       دیا کرے ۔ تا کہ قواعد ازبر ہو جائے  اور علم نحو میں مہارت حاصل ہو  جائے۔                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                    صرف اسی غرض  سے بندہ   نے  اس کا جمع کرنے کا در پے ہوا اور اس میں اپنی محنت خرچ کی ورنہ یہ میرا علم کا مظاہر نہیں کیونکہ بندہ  اس فن میں تہی دست ہے ۔ لہذ ا اگر اسمیں  کسی قسم  کمی اور خامی کسی کی نظر میں  آجائے  تو عفو کی نظر سے دیکھے۔
اہل علم سے درخواست  اگر آپ اس  میں غلطی محسوس کرے اور بغرض اصلاح مجھے مطلع فرمائے۔ اللہ تعالٰی خیر خواہ کو  اجر جزیل عطا فرماتے ہیں۔
امور ذیل کا  ضرور خیال رکھے
1- ہر ہرقاعدہ  ازبر کرنے سے پہلے قدم سامنے نہ بڑھائے۔
2- ازبر کے بعد مادری زبان میں مذاکرہ کرے۔
 3-اپنی طرف سے مزید مثالیں بنائے۔
4-اپنی کاپی میں نوٹ کرے۔














بسم اللہ الرحمٰن الرحیم
الحمد لاہلہ  و الصلوۃ  علٰی اھلہا۔
اللفظ
اللفظ مایتلفظ بہ الاسان یعنی جس چیز کو  تلفظ کر سکے اور بول سکے  وہ لفظ ہے۔ خواہ وہ لفظ معنی دار ہو  یا  نہ ہو۔اول( یعنی معنی دار لفظ )کواصطلاح میں  لفظ مستعمل  اور لفظ موضوع کہا جاتاہے۔ اور جہاں تک علم نحو کا تعلق ہے  وہ معنی دار لفظ کے ساتھ ہے۔ اور ثانی  (یعنی غیر معنی دار لفظ) کو  اصطلاح میں  غیر مستعمل کہاجاتا ہے اور اس کو مہمل بھی کہا جاتاہے۔
لفظ مستعمل کی مثال: قال  رسو ل اللہ صلی اللہ علیہ و سلم
لفظ غیر مستعمل کی مثال: دیز،  زید  سے۔ وجر،  شجر سے۔ لقم،  قلم سے۔
اقسام لفظ مستعمل
مفرد                                                                                                                                                       مرکب
مفرد ایک معنی دار لفظ کو کہاجاتا ہےیعنی  مفرد وہ لفظ ہے  جو اکیلا ہو اور اکیلا معنی پر دلالت  کرنے والا ہو۔ جیسے:
 الحمد  للہ  رب العٰلمین و الصلوۃ علٰی النبی الکریم۔
 اقسام مفرد
اسم                                                                     فعل                                                                   حرف
اسم  وہ کلمہ ہے جو اپنے معنی پر دلالت کرنے میں دوسرے کلمہ کا محتاج نہ ہو اور اس میں تین زمانوں میں سے کوئی ایک زمانہ بھی  نہ ہو اور اس کو اسطرح بھی تعبیر کی جا سکتی ہے۔کہ اسم وہ کلمہ ہے جس کا معنی سمجھ  میں آسکے اور اس میں زمانہ نہ ہو۔اسکی پہچان یہ ہے۔
(1) شروع میں الف و لام داخل ہونا۔ جیسے: والطین و الزیتون و ھٰذاالبلد  الامین۔
(2) حرف جر کا داخل ہونا۔جیسے: ﴿ ادع الی سبیل ربک بالحکمۃ﴾ ۔﴿ ولم یک من المشرکین
(3)  آخر میں تنوین ہونا۔جیسے: ﴿ ان ابرٰہیم کان  امۃ ً قانتًا للہ  حنیفًا
(4)مسند الیہ    ہونا  یعنی اس کی طرف کسی  یا فعل کا اسناد ہونا۔جیسے: ﴿ وقالت امرأۃ فرعون﴾قال رسو ل اللہ  ۔ الرسول  صادق ۔ العلم نافع۔
(5)  مضاف الیہ  ہونا ۔جیسے :﴿ وقالت امرأۃ فرعون  ﴿ ادع   الی سبیل ربک قال رسول اللہ ۔
(6)موصوف ہونا۔جیسے:﴿ ادع   الی سبیل ربک باکحکمۃ و الموعظۃ الحسنۃ
﴿ واجتباہ و ھداہ الی صراط مستقیم  
 (7) مصغّر ہونا یعنی کسی  اسم کا تصغّیر کے وزن پر ہونا یعنی  فعیل ، فعیلل ، فعیلیل اور فعیلۃ کے وزن پرہونا۔
(8) کسی اسم کا اخر یائے نسبتی مشددہ کا ہونا۔ جس کو  اسم منسوب بھی کہا جاتاہے۔ جیسے:جاء رجل شامی الی معاویۃ۔ ھذا طالب بنغلادیشی۔
(9) تثنیہ ہونا۔جیسے: ﴿فان لم یکونا رجلین فرجل و امرأتان
(10) جمع ہونا۔ جیسے: ﴿ولم یک من المشرکین﴾ ﴿واستشھدو اشھیدین من رجالکم﴾﴿ ھو اعلم بالمھتدین
 (11) آخر  میں تائے متحرک ہونا یعنی گول تا  ”ۃ“ ہونا ۔ جیسے ﴿ وقالت امرأۃ فرعون قرۃ  عین لی و لک  ھذہ درۃ ثمینۃ
 (12) ندا ہونا۔ جیسے: ﴿ یا یحیٰ خذ الکتاب بالقوۃ﴿ یا زکریّا انا نبشرک بغلام
 ﴿قالوا یا نوح قد جادلتنا فاکثرت جدالنا
فعل: فعل وہ کلمہ ہے جو اپنے معنی پر دلالت کرنے میں کسی دوسرے کلمہ کا محتاج نہ ہو اور اس میں تین زمانوں میں سے کوئی ایک زمانہ  ہو اور اس کی تعبیر اس طرح بھی کی جا سکتی ہےکہ جس کا معنی سمجھ  میں آسکے  اور اس میں زمانہ ہو۔ اس کی پہچان یہ ہے۔
(1) شروع میں” قد“ ہونا ۔ جیسے: ﴿ قد افلح من تزکی
(2) سین ہونا۔جیسے:﴿سیھزم  الجمع ویولون  الدبر
 (3) سوف ہونا۔جیسے:﴿کلا سوف تعلمون
 (4) حرف جازم کا داخل ہونا۔جیسے:﴿ لم یلد و لم یولد
 (5) ضمیر مرفوع متصل کا لاحق ہونا۔جیسے: ضرب الی ضربنا۔
(6) تائے ساکنہ ہونا۔ جیسے: ﴿قالت النصاری لیست  الیھود علی شیء
 (7)امر ہونا۔جیسے:﴿ اذھب انت و ربک  فقاتلاو نحن ھٰھنا قاعدون
 (8) نہی ہونا۔ جیسے :﴿یا بنی لا تشرک باللہ ان الشرک لظلم عظیم
حرف : وہ کلمہ  جو اپنے معنی  پر دلالت کر نے میں دوسرے کلمہ کا محتاج ہو، اس کی تعبیر اس  طرح بھی  کی جا  سکتی ہے کہ  حرف وہ کلمہ ہےجس کا معنی دوسرے کلمہ کے ملائے بغیر سمجھ میں نہیں آسکے۔
جیسے:﴿  ان اشکر لی و لوالدیک  الی المصیر ﴿  اذھب الی فرعون انہ طغی 
﴿  من بنغلادیش الی مدینۃ الرسول
اقسام لفظ مستعمل
مرکب                                                                                                                           مفرد

اقسام مرکب
مرکب تام                                                                                                                                                مرکب ناقص
مرکب تام اس ترکیب کو کہتے ہیں کہ جس کے قائل  اپنے  قول پر سکوت کرنے کے بعد  سامع  یعنی سننے والے کو کوئی  خبر یا  کوئی طلب معلوم ہو۔ خلاصہ کلام یہ ہےکہ جس سے بات پوری ہو جاتی ہے اس کو مرکب تام  اور جس سے با ت پوری نہیں ہوتی ہے  اس کو مرکب ناقص کہا جاتا ہے۔ اور مرکب  تام کو مرکب مفید جملہ ،کلام  اور اسناد کے نام سے بھی موسوم کیا  جاتاہے ۔



 مرکب تام کی مثال: ﴿ انما المؤمنون اخوۃ وقال علیہ السلام کلکم راع و کلکم مسؤل عن رعیتہ ۔ وقا ل صلی اللہ علیہ  و سلم ان اللہ اوحی الیہ  ان تواضعوا حتی لا یفخر احد علی احد ولا یبغی احد علی احد۔
 ﴿علم الانسان ما لم یعلم راشد معلم زینب حاضرۃ
اقسام مرکب مفید 
جملۂ خبریہ                                                                                                                                    جملہ ٔ انشائیہ
جملہ ٔ خبریہ:وہ مرکب مفید ہے کہ جس کے کہنے والے کو  سچا   یا جھوٹا  کہہ سکے کہ  جیسے،  قا ل  رجل   رأت  علی الجسر  دکان الفاکہۃ و السیارۃ  و الاسماک۔
جملہ انشائیہ: وہ مرکب مفید  ہے        کہ  جس کے کہنے والے کو سچا یا جھوٹا نہ کہ سکے   اور وہ   کئی  قسم پر  منقسم  ہوتا
(1) امر   جیسے:﴿ کلوا واشربوا من رزق اللہ
(2) نہی، جیسے:﴿ لا تشرک  با للہ ان الشرک  کظلم عظیم
 (3) استفہام  جیسے:﴿أأنتم اشد خلقا ام السماء بناھا
(4) تمنی جیسے :﴿یالیتنی کنت ترابا
(5) ترجی جیسے:﴿وما یدریک لعل الساعۃ قریب
 (6) عرض جیسے  :الاتذھب  حامد فتشتری اللبن
 (7) ندا  جیسے: ﴿یا یحیٰ خذ الکتاب بقوۃ
(8) عقو د  جیسے: بعت و اشتریت  ، نکحت و قبلت
(9) قسم جیسے: ﴿و الضحی ٰ و اللیل اذاسجیٰ﴾
 (10) تعجب جیسے: مااعذب کلامک  و ما اکرم باستاذ
مرکب ناقص
مرکب ناقص: اس کو مرکب غیر مفید بھی کہا جاتا ہے اور اسکی  بھی  کئی قسمیں ہیں ۔
(1) مرکب اضافی : مرکب اضافی وہ مرکب  ناقص ہے  جو مضاف اور مضاف  الیہ  سے مل کر بناہو جیسے: ﴿محمد رسول اللہ﴾﴿ تبت یداابی لھب و تب
 نوٹ:- مضاف اس اسم  کو کہتے ہیں جس کو دوسرے اسم  کی طرف  نسبت کرے اور جس کی طرد نسبت کرے  اس کو مضاف الیہ  کہا جاتاہے۔
(2)مرکب توصیفی: وہ مرکب ناقص ہے  جو موصوف اور صفت سے ملکر بنا ہو۔
 نوٹ:- صفت وہ ہے جس سے کسی اسم کی برائی یا بھلائی معلوم ہو اور موصوف وہ ہے جس کی برائی یا بھلائی  بیان کی جاوے  جیسے:﴿ بسم اللہ الرحمٰن الرحیم۔ اعوذ  باللہ من الشیطان الرجیم
(3)مرکب بنائی: وہ مرکب ناقص ہے جس  میں  دو اسم کو ایک کیا جاوے اور دوسرا اسم کوئی حرف کا متضمن ہو  اور وہ کل دس ہیں۔  اور اس بارے میں آسان طریقہ یہ ہے کہ ان کو یاد کرلیا جاوے
 (1) احد عشر (2) اثنا عشر(3) ثلاثۃ عشر(4)اربعۃ عشر(5) خمسۃ عشر(6)ستۃ  عشر(7) سبعۃ عشر(8) ثمانیۃ عشر(9) تسعۃ عشر۔


 نوٹ:- اس مرکب کو مرکب تعدادی  بھی کہا جاتا ہے  اور اثناعشر کے علاوہ باقی آٹھ اسموں کے  ہر دونوں جز مبنی بر فتحہ ہیں  اور اثنا عشر میں  پہلا جز معرب ہے  اور جزثانی مبنی بر فتحہ ہے۔ ‏
(4)مرکب صوتی: وہ مرکب ناقص ہے جس کا دوسرا جز  صرف صوت  اور آواز ہو جیسے،
سبویہ، عمرویہ، نفطویۃ ۔
(5)مرکب منع صرف : وہ مرکب ناقص ہے جو دو اسموں  سے ملکر یک اسم بنا ہو اور اسم دوم کوئی حرف کامتضمن نہ ہو۔ جیسے، بعلبک ۔ حضرموت۔
 (6)مرکب اسنادی: وہ مرکب ناقص ہےجو مسند اور مسند الیہ سے ملکر  کوئی علم بنا ہو۔ جیسے ،
 تأبط شر۔ سرمن راٰی
اعراب کے اعتبار سے اسم کی اقسام
 معرب                                                                                                                                                    مبنی
معرب:معرب وہ اسم ہے جس کے شروع میں مختلف عوامل آنے کی وجہ سے  اس کے آخر میں  اختلاف ہوتاہے  اور  اسکو  اسم متمکن کے نام سے بھی موسوم کیاجاتاہے جیسے،﴿  اللہ نور السموٰت والارض﴾ ﴿ ان اللہ رب وربکم  فاعبدوہ﴾﴿   للہ ما سموٰت ومافی الارض
اقسام معرب
 (1)اسم متمکن جب ترکیب میں واقع ہو۔ جیسے ﴿ ان الانسان لکفور﴾﴿ ان الشیطان للا نسان عدو منینالانسا ن عبد الاحسان۔
فعل مضارع جب نون تاکید اور نون جمع مؤنث سے خالی ہو۔ جیسے
 ﴿ یدخل من یشاء فی رحمتہ﴾﴿  ماکان اللہ  ان یتخذ من ولد ﴾﴿ علم الانسان ما لم یعلم ﴾﴿ وما تشاءون الا  ان یشاء اللہ  ﴿ وداؤد و سلیمان اذ یحکمان فی الحرث﴾﴿   لا تتبعو ا خطوات الشیطان﴾﴿    ویذھبا بطریقتکم المثلیٰ﴾ طالبان لم یذھبا مع الاستاذ
اقسام اعراب اسم
(1)حالت رفع،ضمہ کے ساتھ۔حالت نصب، فتحہ کے ساتھ۔حالت جر ، کسرہ کے ساتھ ہونے والے اسما۔
1۔مفرد منصرف صحیح ۔جیسے: ﴿ الحمد للہ﴾﴿ جاء امراللہ﴾﴿ قال رسول اللہ﴾﴿  اللہ فاطر السموٰت والارض﴾﴿ ان اللہ علی کل شیء قدیر ﴾﴿علم الاسان مالم یعلم﴾ ﴿للہ ما فی السموٰت ومافی الارض﴾﴿ ان الشیطان للا نسان عدو منین ﴾﴿   للذکر مثل حظ الانثیینذھبت الی المدرسۃ
2- مفرد منصرف  جاری مجرائے صحیح۔جیسے : جاء الظبی۔ رأیت الظبی۔ مررت بظبی۔ ھذا دلوہ۔  فادلی دلوہ وجاء بدلوہ ۔ ھذا طلو۔ ولم یکن لہ کفوا ۔ ذھب بطلو۔
3-جمع مکسر منصرف۔جیسے:العلماء ورثۃ الانبیاء۔ ﴿انکم لتأتون الرجال شھوۃ من دون النساء ﴾﴿للرجال  نصیب ممااکتسبوا  ﴾﴿الطیر محشورۃ ﴾﴿ان یکونوا فقراء یغنھم اللہ من فضلہ﴾﴿  للفقراء المھاجرین﴾﴿  الرجال قوامون علی  النساء  ﴾﴿وآتوا النساء صدوقتھن نحلۃ   الکتب کثیرۃ ۔ اشتریت الکتب۔ جاء حامد بکتابہ۔
(2) حالت  رفع ضمہ کے ساتھ اور حالت نصب وجر  کسرہ کے ساتھ ہو نے والا اسم جمع مؤنث سالم ہے۔جیسے:  ﴿تکاد السموٰت  یتفطرن ﴾﴿خلق  السموٰت والارض﴾﴿ للہ ما فی السموٰت والارض﴾﴿  المؤمنو ن والمؤمنات بعضھم اولیاء بعض  ﴾﴿وعد اللہ المؤمنیں  والمؤمنات﴾﴿  قل للمؤمنات یغضضن  من ابصارھنھذہ ظبیات  ۔اخذت ظبیات۔ مررت بظبیات۔
نوٹ:جمع مؤنث سالم  وہ جمع ہے  جس کے آخر میں  الف اور لمبی تا(ت) ہو۔
(3) حالت رفع میں ضمہ بغیر تنوین اور  حالت نصب و جر میں فتحہ بغیر تنوین کے ساتھ ہونے والا اسم غیر منصرف ہے۔
 نوٹ:غیر منصرف وہ اسم ہےجس میں منع صرف کے نو سببوں میں سے دوسبب  ہوں یا ایک سبب جو دو سبب کے قائم مقام ہو ،موجود ہو۔اور وہ نو اسباب یہ ہیں۔عدل، وصف ،تانیث ،معرفہ، عجمہ،جمع،ترکیب،وزن فعل و الف نون زائدتان۔
عدل کی مثال:جاء عمرو زفر۔ رأیت عمر وزفر۔ ذھبت بعمر وزفر ۔ جاءت النساء مثنی و ثلاث ورباع۔ رأیت الاسماک مثنی و ثلاث ورباع  ۔ فانکحوا ما طاب لکم  من النساء مثنی  وثلاثا ورباع۔
نوٹ: اوزان عدل کل چھہ ہیں۔
(1) فُعَال جیسے:ثلاث ،رباع،خماس،سداس۔
(2)مَفْعَل جیسے:مثلث، مربع۔
(3)فُعَلُ جیسے:عمر، زفر ،اخر،جمع۔
(4)فَعَلُ جیسے:سحر۔
(5) فَعالُ جیسے:قطام ، حذار۔
(6)فَعْلِ جیسے:امس۔
وصف کی مثال: جاء نی افضل منہ ۔ رأیت افضل منہ۔ مررت بافضل منہ۔ جاء احمر ۔ ر أیت  احمر۔ مررت باحمر۔
تانیث کی مثال: ھذا عین ھمت۔ رأیت عین ھمت۔ مررت بعین ھمت۔ جاءت حبلیٰ۔ رأیت حبلیٰ۔ مررت بحلیٰ وکذلک بشریٰ و فرادیٰ۔ ھذہ ارض بیضاء عفراء۔ رأیت ارضا بیضاء عفراء ۔ مررت بارض  بیضاء عفراء۔ کذلک حمراء و صفراء۔
 معرفہ کی مثال: ھذہ ٖ عائشۃ۔  رأیت عائشۃ۔ مررت بعائشۃ  کذا فاطمۃ۔
عجمہ کی مثال:کفر فرعون و ثمود۔  عذب اللہ فرعون وثمود۔ ھلک قوم فرعون و ثمود۔ کذلک ابراھیم واسحاق  و یعقوب۔
نوٹ:                 صالح و ہود ومحمدباشعیب و نوح لوط* منصرف داں ودیگر باقی ہمہ لاینصرف
مذکورہ شعر میں ذکر کئے ہوئے انبیاء علیہم السلام کے ناموں کے بغیر  تمام انبیائے کرام  علیہم السلام کے نا م غیر منصرف ہیں۔
جمع کی مثال: ھذہٖ محاریب و تماثیل و حدائق ۔ رأیت محاریب و تماثیل و حدائق۔ مررت  بمحاریب و تماثیل و حدائق۔
 نوٹ: یہاں جمع سے مراد  وہ اسم جو  فَعَالِلُ ،فَعَالُّ اور فَعَالِیْلُ کے وزن پر ہو جیسے: مساجد،دوابُّ  اور مصابیح۔
ترکیب کی مثال: ھذہٖ حضرموت۔ دخل رجل حضرموت۔ذھب  الی حضر موت۔کذلک  بعل بک۔
وزن فعل کی مثال: جاء احمد و احمر۔  رأیت احمد و احمر۔مررت باحمد و احمر۔
الف و نون زائدتان کی مثال: ھذا رمضان ۔ بلغت رمضان شھر رمضان الذی انزل فیہ القراٰن وکذلک شعبان و عثمان و غضبان۔
 نوٹ:(1)  تانیث  بالف مقصورۃ اور ممدودہ اور جمع منتہی الجموع اور وہ جمع تکسیر جس کےآخر میں الف ِ ممدودہ ہو۔ایک سبب دو سبب کے قائم مقام ہیں۔
 (2) غیر منصرف پر الف و لام داخل ہونے سے   اور غیر منصرف   دوسرے اسم کی طرف اضافت ہونے سے اس کا حکم باطل ہوجاتا ہے۔اور اس پر کسرہ اور تنوین  داخل ہوتاہے۔ جیسے: مررت بافضل القوم والافضل۔ ﴿لقد خلقنا الانسان فی احسن تقویم۔
نوٹ: غیر منصرف کا حکم یہ ہے کہ وہ کسرہ اور تنوین  قبو ل نہیں کرتا ہے۔
(4) رفع واو کے ساتھ اور نصب  الف کے ساتھ اور جر یا کے ساتھ ہونے والا اسم -سمائے ستۂ معروفہ یا مکبرہ یعنی اب، اخ،ھن،حم،فم اور ذو مالٍ۔
اسمائے ستۂ معروفہ پر مذکورہ اعراب  ہونے کیلئے شرط یہ ہے کہ ان کا مکبرہ ہونا مصغرّہ نہ ہونا، واحد ہونا تثنیہ  اور جمع نہ ہونا ،مضاف ہونا لیکن یائے متکلم کے غیر کی طرف۔ جیسے: ﴿ إذ قالوا ليوسف وأخوه أحب إلى أبينا منا ونحن عصبة إن أبانا لفي ضلال مبين
نوٹ:یہ بات ضرور یاد رکھنا چا ہئے کہ  شرائط مذکورہ جو ذکر کی گئی ہیں وہ ذو کے بدون ہیں۔  اور ذو پر مذ کورہ اعراب جاری ہونے کیلئے  شرط یہ ہے کہ وہ اسم ظاہر کی طرف اضافت ہو۔ اور وہ اسم ظاہر صیغہ صفت نہ ہو۔ جیسے: جاءنی ذومالٍ۔ رأیت ذامالٍ ۔ مررت بذی مالٍ۔﴿ وان ربک لذومغفرۃ
﴿وان کان ذامال ﴾﴿الی ذل ذی ثلاث شعب
  نوٹ: * اگر اسمائے مذکورہ  مکبرہ نہ ہو  بلکہ مصغرّہ ہو یعنی تصغیر کسی وزن پر ہو۔ تو ان پر مفرد منصرف صحیح کا اعراب جاری ہوگا۔ جیسے:جاءنی ابیٌّ واخیٌّ۔رأیت ابیاًّو اخیّاً۔  ذھبت بابیٍّ  واخیٍّ۔ کذلک البواقی۔* اور  اگر واحد نہ ہو  بلکہ تثنیہ اور جمع ہو۔تو ان پر  تثنیہ اور جمع مکسر منصرف کا اعراب جاری ہگا۔جیسے: تثنیہ کی مثال  جیسے:جاءنی ابوان و اخوان۔ رأیت ابوین و اخوین و مررت بابوین و اخوین۔
 جمع کی مثال: ھم اباء و اخوۃ۔ وان اباءً و اخوۃًذھبوا وتلک الاثواب لاباء و اخوۃ۔کذالک البواقی۔* اور  جب یائے متکلم  کی طرف  اضافت ہو تو ان  پر غیر جمع مذکر سالم مضاف بیائے  متکم کا اعراب جا ی ہوگا(یعنی تینوں حالات  میں اعراب تقدیری ہوگا)۔مثال اسکی یہ ہے۔ جاءنی ابی و اخی، اِنّ ابی و اخی ذھبا و ذھبت بابی و اخی۔* اور جب بالکل مضاف ہوں تو مفرد منصرف صحیح کا اعراب جاری ہوگا۔اس کی مثا ل یہ ہے۔ذھب ابٌ و اخٌ و اِنّ ابا و اخا اکلاواِنّ لاب و اخ مالا۔(5) رفع الف کے ساتھ اور نصب و جر یائےساکن ماقبل مفتوح کے ساتھ ہونے والااسم-مثنّی یعنی تثنیہ: تثنیہ کی تین قسمیں ہیں (1) حقیقی (2) صوری(3) معنوی تثنیۂ حقیقی کی مثال جیسے: ھما زیدان، ضربت زیدین و ذھبت بزیدین ﴿وقال رجلان  من الذین الخ﴾ ﴿ مرج البحرین  یلتقیان﴾﴿ رب المشرقین  ورب المغربین﴾۔  تثنیہ ٔ صوری کی مثال : ھما اثنان مذکر کیلئے ، ھما اثنتان و ثنتان مؤنث کیلئے۔رأیت اثنین  و اثنتین، مررت باثنین واثنتین و ثنتین﴿إذَا حَضَرَ أَحَدَكُمْ الْمَوْتُ حِينَ الْوَصِيَّةِ اثْنَانِ ذَوَا عَدْلٍ مِنْكُمْ  ﴾ ﴿واذارسلناالیھم اثنین ﴾﴿ ربنا امتنا اثنتین﴾ تثنیۂ معنوی کی مثال : جاء کلاھما و رأیت کلیھما ومررت بکلیھما وجائت کلتاھما ورأیت کلتیھما و مررت بکلتیھما﴿ إما يبلغن عندك الكبر أحدهما أو كلاهماچنوٹ : کلا مذکر کیلئے استعمال ہوتا ہے اور کلتا مؤنث کیلئے۔ اور ان دونوں میں تثنیہ کا اعراب جاری ہونے کیلئے  شرط یہ ہے کہ  دونوں اسم ضمیر کی طرف اضافت ہوں۔ اگر اسم ظاہر کی اضافت ہوں تو  دونوں کا اعراب تقدیری ہوگا۔ جیسے جاء کلا الرجلین  و کلتاالمرأتین مررت بکلا الرجلین و  کلتا المرأتین ﴿وکلتاالجنتین اٰتت اکلھا﴾ نوٹ : تثنیۂ حقیقی وہ ہے  جس کے مفرد کے آخرمیں  الف ونون لاحق  کئے گئے ہوں جیسے: زیدان،  زید  سے  ۔  قلمان ،  قلم سے ۔حدیقتان،  حدیقۃ سے۔ تثنیۂ صوری  وہ   تثنیہ ہے جو مفرد کے آخر میں الف و نون زیادہ ہو کر نہیں بناہو بلکہ صورت اور معنی کےاعتبا ر سے  تثنیہ ہے۔جیسے :اثنان و اثنتان و ثنتان کہ دونوں کے آخر میں الف اور  نون  ہونے کی وجہ سے  رجلان کی طرح ہو گئے۔اور رجلان رجل  مفرد پر الف و نون زیادہ ہونے سے  بنا۔اور اثنان و اثنتان کسی واحد سے نہیں بنے کیوں کہ ان دونوں کے واحد  ہے ہی نہیں بلکہ  دو نوں دو  مستقل وزن ہیں۔ تثنیۂ معنوی  وہ تثنیہ  ہے جو  لفظ کےاعتبار سے  مفردہے   لیکن معنی کے اعتبا ر سے  تثنیہ پر  دلالت کرنے والا ہے جیسے: کلا کلتا۔ (6) رفع واو کے ساتھ نصب اور جر  یائے ساکن ماقبل مکسور کے ساتھ  والا اسم- جمع مذکر سالم:ججع حقیقی کی مثال جیسے ھم مسلمون ۔ رأیت مسلمین ومررت بمسلین۔ ﴿قد افلح المؤمنون﴾  و﴿وعد اللہ المؤمنین﴾ ﴿و کا ن بالمؤمنین رحیما﴾ جمع صوری کی مثال جیسے جاء عشرون رجلا، رأیت عشرین رجلا و مررت بعشرین رجلا۔ وکذالک ثلاثون واربعون و خمسون الخ۔ وحملہ وفصالہ ثلاثون شھرا وواعدنا موسیٰ ثلاثین لیلۃ فمن لم یستطع فاطعام ستین مسکینا جمع معنوی کی مثال جیسے جاء اولومال رأیت اولی مال  ذھبت باول مال۔ واولو العلم قائما بالقسط  ولکمن فی القصاص حیاۃ یا اولی  الالباب واختلاف اللیل والنھار لاٰیت  لاولی  الالباب۔
 نوٹ : جمع  حقیقی وہ ہے  جس کے مفرد کے میں  کچھ تصرف کرکےاس کو بنا لیا گیاہو جیسے: رجال و مسلمون   ۔
 جمع صوری  وہ   جمع ہے جسکے مفرد کے آخرمیں کچھ تصرف اور تغیر سے نہیں بنابلکہ صورۃ جمع ہے ۔جیسے :عشرون  تسعون  وخمسون  اسلئے کہ  ان الفاظ کا مفرد ہی نہیں جس کے آخر  میں واو اور  نون لاحق کر کے  ان کو بنایا گیا ہوں۔
 جمع معنوی  وہ جمع  ہے جو نہ حقیقۃ جمع ہے اور نہ صورۃ   بلکہ صرف  معنی کے اعتبا ر سے  جمع پر  دلالت کرنے والا ہے جیسے: جیسے اولو، اس میں  نہ حقیقۃ جمع کا  کوئی نشانہ ہے اور نہ صورۃ۔یاد رکھنی کی بات ہے کہ  اولو بھی  ذو کی طرح  ہمیشہ  اسم کی طرف اضافت ہوکر استعمال ہوتا ہے اور کہا جاتاہے  یہ ذو کی جمع ہے  من غیر اللفظ۔
(7) رفع تقدیر ی ضمہ کے ساتھ  اور نصب  تقدیری فتحہ کےساتھ ارو جر تقدیر ی کسر ہ کے ساتھ ہونے والا اسم- (1 )اسم مقصور۔ جیسے  الفتیٰ المرعیٰ المولیٰ الھدیٰ الاعلیٰ ۔ الفتیٰ قوی۔ ان الفتی ٰ حاضر۔ والقی الی الفتیٰ کتابا  ۔
﴿فذکر ان نفعت الذکریٰ﴾ ﴿والذی اخرج المرعیٰ﴾﴿  سبح اسم ربک الاعلیٰ﴾
نوٹ: مقصور کا لغوی  معنی  روکنا(مقصورۃ ) بمعنی جس کو روکا گیا الف مقصورہ کو چونکہ حرکات ثلاثہ سے روکا جاتا ہے اسلئے اسکو مقصورہ کہا جاتاہے۔  اسم مقصور وہ  ہے جس کے آ خر میں الف مقصورہ ہو۔ عربی میں الف مقصور ہ  اس اسم کوکہتے ہیں  جس کے آخر میں الف ہو اور اس کے بعد ہمزہ نہ ہو۔ اور وہ الف محض تانیث کیلئے نہ زیادہ کیاگیا ہو ۔ کیوں کہ جو الف  ِتانیث  اسم کے آخر میں ہوتا ہے وہ اسم غیر منصر ف ہوتاہے اور یہ منصرف ہے۔خواہ وہ الف  لفظ  میں  مذکور ہو العصا یا بوجہ التقائے ساکنین گر گیاہو جیسے عصاً وہدیً یا اصل ہو جیسے موسیٰ و عیسیٰ۔ نوٹ:العصا میں جو الف ہے وہ  الف مقصورہ کا ہے اور عصاً میں جو الف ہے وہ رسم خط کا الف ہے  اور اسمیں الف مقصورہ مقدرہے اور صورت تنکیر میں الف رسم خط کیلئےہے  پڑھنے کیلئے نہیں اور تعریف بلام اور اضافت کی صورت میں  اس کو پڑھا جاتا ہے۔ (2) غیر جمع مذکر سالم مضاف بیائے متکلم: یعنی یہ اسم جمع مذکر سالم نہ ہو اور یائے متکلم کی طرف اضافت  ہو۔ اس قسم کے اندر  مفرد ،جمع مؤنث سالم اور جمع  مکسر کے تمام اوزان  داخل ہیں خواہ منصرف ہو یا غیر منصرف  اور اس کے اندر تثنیہ ، جمع مذکر سالم، اسم منقوص اور اسم مقصور داخل نہیں ہیں۔ جیسے : ھذا غلامی و خذ غلامی  واذھب بغلامی۔ھم غلمانی و اضرب غلمانی و مررت بغلمانی۔ھذہ غرفاتی  وکرّاساتی  وان غرفاتی و کرّاساتی  جدیدۃو مررت بغرفاتی و کرّاساتی۔ (8) رفع تقدیر ضمہ کے ساتھ ۔ نصب تقدیر فتحۂ لفظی کے ساتھ اور جر تقدیر کسرہ کے ساتھ ہونے والا اسم-اسم منقوص۔نوٹ:  اسم منقوص  وہ اسم ہے جسکے آخر میں یا ماقبل مکسور ہو جیسے :القاضی الداعی  الحاوی الساقی۔ القاضی  حاضر۔ رأیت القاضی فی السوق  وادفع الی القاضی ھذہ الدراھم   ﴿من یھد  اللہ فھو المھتدی﴾﴿ یا قومنا اجیبوا داعی اللہ   مھطعین الی الداعی یقول الکافر ون  ھذا یوم عسر﴾ (8) رفع تقدیر ضمہ کےساتھ ۔ نصب وجر  یا ماقبل  مکسور کے ساتھ ہونے والا اسم- جمع مذکر سالم مضاف  بیائے متکلم۔  جیسے : ھم مسلمیّ ۔ اعطیت مسلمیِّ الدراھم  و ذھبت بمسلمیِّ  ﴿وقال رسول اللہﷺ او مخرجیّ ھم ﴾وھنالک رأیت منفقیِّ  ﴿ما انا بمصرخکم وماانتم بمصرخیِّ﴾














  














































































































































শবে বরাত- কিছু ভ্রান্তি নিরসন..

........................................ (শবে বরাত কোথায় আর আমরা কোথায়!) ....................................................... ইস...

Clock